করোনা মহামারির ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহতা বাড়ার ফলে এবার সারাদেশে 'কঠোর বিধিনিষেধ' ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে সীমিত পরিসরে ২৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী চলছে বিধিনিষেধ। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করবে সরকার। ২৫ জুন তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
  
এর আগে গত ঈদ-উল ফিতরে সরকারের বিধিনিষেধ থাকলেও ঈদ করতে রাজধানী ছেড়েছিল সাধারণ মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের লকডাউনের ঘোষণা আসতেই বাড়ির পথে ছুটছে মানুষ। যদিও সরকার ইতোমধ্যেই দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে রিকশা ও মোটরসাইকেল বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে। 
 

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকায় মোটরসাইকেল, মাইক্রবাসে চড়ে কর্মমুখী মানুষদের ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। কিন্তু সরকারের বিধিনিষেধ আমলে না নিয়েই সাধারণ মানুষ ছুটছে বাড়ির উদ্দেশে। গত ২৬ জুনও দিনভর গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকায় বাড়িফেরা মানুষের ছুটে চলার চিত্র দেখা গিয়েছিল।

রাজধানীতে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে রড মিস্ত্রির কাজ করেন রুবেল। 'শাটডাউনের' কথা শুনে নিজ বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। মিরপুর থেকে রিকশা ও হেঁটে আমিনবাজার এসেছেন। তিনি বলেন, প্রাইভেট কারে করে বাড়িতে যেতে হবে। আমিনবাজারে মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। তবে গাড়ির ভাড়া অনেক বেশি। কয়েকজনকে ভাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, এক হাজার ৫০০ টাকা লাগবে। সবকিছু চিন্তভাবনা করেই বাড়িতে চলে যাচ্ছি। এবারের লকডাউন এক থেকে দুই মাস থাকতে পারে।
  

সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অমান্য করে সাধারণ মানুষ যে যেভাবে পারছে  বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হচ্ছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতো গণপরিবহন না চলায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এসব মানুষের অধিকাংশই শ্রমজীবী।

রাজধানীল ফুটপাতে জামাকাপড়ের ব্যবসা করেন টাঙ্গাইলের সৈয়দ হাসিব। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউন ঘোষণার খবরে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, যতদিন বিধিনিষেধ থাকবে ততদিন কোনো দোকানপাট খোলা যাবে না। দোকানপাট খুলতে না পারলে আমরা থেকেই কী করবো। তাছাড়া মনে হচ্ছে ঈদের আগে কোনো দোকানপাট খোলা যাবে না। ঢাকায় থাকলে শুধু বসে বসে খেতে হবে, এজন্যই বাড়ি চলে যাচ্ছি। সরকার লকডাউন শিথিল করলে আবার ফিরে আসবো।
 
মোবারক নামের একজন বলেন, আমি কোনো গাড়ির ড্রাইভার বা হেলপার না। যেসব গাড়িগুলো যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে, তাদের যাত্রী সংগ্রহ করে দিতে পারলে বিনিময়ে কিছু টাকা দেয় তারা। এভাবে সারাদিন কাজ করলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকাল থেকে যাত্রীর চাপ ছিল আমিনবাজারে, একইসঙ্গে গাড়ির চাপও ছিল। অনেক মানুষ পুরো পরিবার নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে।
   
এসআর/এসএম