বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া দ্বিতীয় কেউ থাকলেই পুলিশের জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পুলিশ বলছে, সরকার নির্দেশিত প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নেই কঠোর অবস্থানে রয়েছেন তারা। আইন অমান্যের অভিযোগে জরিমানা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে সড়কে চলাচলকারী মোটরসাইকেলের ওপর ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি রাখতে দেখা যায়। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) জারি করা নির্দেশনায় রাইড শেয়ারিং কার্যক্রম সীমিত সময়ের জন্য স্থগিত রেখেছে উবার, পাঠাও, সহজসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এরইমধ্যে অ্যাপস সেবা বন্ধ করে দিয়েছে তারা। 

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া অন্য আরোহী বহন না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, লকডাউনের মধ্যে মোটরসাইকেলে চালকের সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তি রাইড শেয়ার করছেন। অথবা কেউ কেউ পেশাগত কারণেও রাইড শেয়ার করছেন। ফলে একই হেলমেট বারবার বিভিন্ন মানুষ ব্যবহার করছেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

তবে মঙ্গলবার সকালে সড়কে বেরিয়ে পুলিশের এমন কড়াকড়ি আর জরিমানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ শরীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, 
মোটরসাইকেলে সহকর্মীকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর এখন আবার ১২শ টাকার মামলা দিয়েছে। আমি অফিসেও যেতে পারলাম না আর এখানেও মামলা খেতে হলো। সব কার্যক্রম খোলা রেখে লকডাউন দেওয়ার কোনো মানে হয় না। এটা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য কষ্ট ছাড়া আর কিছুই না।

প্রাইভেটকার, স্টাফবাস, রিকশা একাধিক যাত্রী পরিবহন করতে পারলেও আমরা কেন পারব না? এমন প্রশ্ন করেন রাইড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত শরিফুল হাসান। তিনি বলেন, আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছি। আমাদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। ইনকামের চেয়ে মামলার টাকাই বেশি হয়ে গেছে।

তবে কাউকে হয়রানি নয় কেবল সরকারি নির্দেশনার যথার্থ বাস্তবায়নে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের ধানমন্ডি জোনের
উপ-কমিশনার জাহিদুল ইসলাম। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি রোধে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে আমরা সেটি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। প্রজ্ঞাপনে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া আরোহী বহনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও নির্দেশনা অমান্য করে যারা এমনটি করছে সেসব ক্ষেত্রে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এইচটি/জেডএস