দিনের আয় ২০০ টাকা, রিকশা ভাড়া ২৫০!
চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন রহিমা খাতুন। কাজে যোগ দিতে গাড়ির জন্য নগরীর বড়পুল এলাকায় অপেক্ষা করছেন। করোনার কারণে বিধি নিষেধ জারি হওয়ায় বন্ধ সব ধরনের পরিবহন। এখন রিকশাই রহিমার শেষ ভরসা। কিন্তু ভাড়া ২৫০ টাকা। যা রহিমার একদিনের মজুরির চেয়েও ৫০ টাকা বেশি।
দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ায় কোথাও সীমিত আবার কোথাও কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ রাখা হয়েছে যান চলাচল। বাড়তি ভাড়া দিয়ে রিকশা-সিএনজির মতো ছোট ছোট পরিবহনে চলাচল করতে হচ্ছে ঘর থেকে বের হওয়া কর্মজীবী মানুষকে। অনেক সময় পুরো দিনের আয় দিয়েও রিকশা পাচ্ছেন না রহিমা খাতুনের মতো নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
বিজ্ঞাপন
রহিমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারাদিন কাজ করে যা পাই তার চেয়ে বেশি রিকশা ভাড়া চাচ্ছে। তাই রিকশা না নিয়ে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে রওনা করতে হচ্ছে।
নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাকরি করি জুবলী রোড এলাকায়। আগে বাসে করে অফিস করতে গেলে খরচ হতো ২০ টাকা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আজ রিকশা করে আসতে ভাড়া লেগেছে ১৫০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, আসা যাওয়ার ভাড়াতেই চলে যাবে ৩০০ টাকা। এভাবে প্রতিদিন আসা যাওয়া করলে বেতন যা পাই তা গাড়ি ভাড়াতেই চলে যাবে।
সোমবার (২৮ জুন) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বড়পুল এলাকায় দেখা গেছে, অফিসগামী মানুষ বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ দুই একটি গণপরিবহন আসলেও তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। এছাড়া ভাড়ায় প্রাইভেটকারে করে মানুষকে গন্তব্য যেতে গেছে।
নাহিয়ান নামের একজন বলেন, মা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। প্রায় আধঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। পরে অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া দিয়েই হাসপাতালে এসেছি।
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, নিউ মার্কেট, এনায়েত বাজার ও কাজির দেউড়ী মোড় ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অনেকেই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছেন। যারা দূরের গন্তব্য যাচ্ছেন, বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, সবকিছু বন্ধ করে অফিস খোলা রাখা হয়েছে। অফিস থেকেও যাতায়াতের ব্যবস্থা করেনি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় ৪০ মিনিট অপেক্ষার পর রিকশা নিয়ে অফিস যাচ্ছি। আজ ২০০ টাকা রিকশা ভাড়া দিতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আলী হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা মোকাবিলায় নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছে ট্রাফিক বিভাগ। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে জরিমানা করা হবে।
কেএম/এমএইচএস