ঢামেকের কাছে ৩০ হোটেলের পাওনা ৪০ কোটি টাকা
করোনাকালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য হোটেল কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের তিন মাস ৩০টি হোটেলে রাখা হয়, যার বিল এসেছে ৪০ কোটি টাকা। এই বিলের পুরোটাই বকেয়া। তবে যত দ্রুত সম্ভব এই বিল পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক।
সোমবার (২১ জুন) সকালে বকেয়া হোটেল বিল পরিশোধের দাবিতে ঢামেকের প্রশাসনিক ব্লকের সামনে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন (বিহা) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। পরে তারা পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে বিহার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কমিটির কো-চেয়ারম্যান খালেদ-উর-রহমান বলেন, ঢামেকের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হোটেলে কোয়ারেন্টাইনের জন্য আমাদের হোটেলগুলোয় খাবারসহ আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের হোটেলগুলোর সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলের চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল- হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রতি দশ দিন পর পর ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিল সাবমিট করবে এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিল পরিশোধ করা হবে। আমরা নানা বিধিনিষেধ অতিক্রম করে গতবছরের আগস্ট থেকে জুলাইয়ের বিল সাবমিট করি। কিন্তু ১১ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিল আমরা পাইনি। মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা বিল ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা বারবার যোগাযোগ করলেও কোনো সুফল পাচ্ছি না। তাই আমদের দাবি করা গতবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর (তিন মাস) পর্যন্ত ন্যায্য বিল চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করার দাবি জানাচ্ছি।
বিহার সহ সভাপতি সাইদুল আলম টিটো বলেন, আমাদের হোটেল ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। এর মধ্যে দেশের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। এই ৪০ কোটি টাকা আমাদের কাছে তেমন কোনো বড় বোঝা নয়। কিন্তু করোনায় আমাদের ব্যবসার অবস্থা ভালো না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। আমাদের অনেক ইউটিলিটি বিল জমে গেছে। তারা বারবার আমাদের নোটিশ দিচ্ছে বিলগুলো দেওয়ার জন্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলসহ অন্যান্য ইউটিলিটি বিল এবং বেতন-ভাতা পরিশোধে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, ইউটিলিটি বিলগুলো একবছরের রেফার্ড পেমেন্টের (কোনো প্রকার ইন্টারেস্ট ছাড়া) সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আগামী একবছরের জন্য ভ্যাট থেকে অব্যাহতি প্রদান করে হোটেলগুলোকে ব্যবসা টিকিয়ে রেখে আপনার পাশে থেকে দেশের উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করবেন।
বকেয়া বিলের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, তাদের বিলের মধ্যে কিছু অসংগতি ছিল, এগুলো আপনারা ভালো করে জানেন। সে বিষয়টি আমি উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। অনেকে যেটা পাওনা তার চেয়ে বেশি সাইন করেছেন। পরে অডিট এসে সেগুলো পর্যালোচনা করেছে। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিল ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
কবে নাগাদ বিল ছাড়া হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, চলতি মাসের (৩০ জুন) মধ্যে আমরা বিল পরিশোধের চেষ্টা করছি।
এসএএ/এসএসএইচ