ঢাকার খালগুলো দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও সবুজায়ন করে সুন্দর নগরী গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, হাতিরঝিলের চেয়েও আরও বেশি সুন্দর করে খালগুলোকে বিনির্মাণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় প্রশস্ত করা সড়ক পরিদর্শনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের ক্ষতি করে উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না বরং কুফল বয়ে আসবে। সুন্দর জীবন-জীবিকার জন্য পারিপার্শ্বিক সব কিছু আমলে নিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত করে জনজীবন অতিষ্ঠ ও শহরকে বিপর্যস্ত করার অধিকার কারও নেই। এটা করতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, রাজধানীসহ দেশের বড় বড় নগরে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে অবকাঠামো নির্মাণের ফলে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে। এটা চলতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত রাস্তা, খোলা জায়গা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নিজস্ব সেফটিক ট্যাংকসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা নিশ্চিত না করে আর কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।

রাস্তা প্রশস্ত করা প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম, নারী-পুরুষ এবং ভলান্টিয়ার অর্থাৎ সব শ্রেণীর মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে এসব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে না পারলে কোনো কাজে সফলতা পাওয়া সম্ভব না। জনগণকে সম্পৃক্ত করায় প্রত্যাশিত ফল আসছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগের জন্য, মানুষের চলাফেরার জন্য যদি পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকে তাহলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়বে। এজন্য এ বিষয়ে রাজধানীবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। রাজধানীতে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ হবে কোনো সমস্যা নেই। আমি এর বিপক্ষে নই। কিন্তু আগে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। খেলার মাঠ, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা ও লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করতে না পারলে সুউচ্চ ভবনে অনুমোদন দেওয়া হবে না।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করার ফলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ভালো কাজ হয়েছে। যার সুফল নগরবাসী পেতে শুরু করেছে। মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে দুই সিটি করপোরেশন যে কাজ করেছে তা এত অল্প সময়ে করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দেশে প্রথমবারের মত জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এটি ফাইনাল স্টেজে আছে। এর মাধ্যমে সমস্ত মানুষকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হবে। আর সবাই মিলে কাজ করলে যেকোনো অসম্ভবকে সম্ভব করা সহজ।

পরে মন্ত্রী স্বেচ্ছায় রাস্তা প্রশস্তকরণে যারা জায়গা দিয়েছেন ও ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/ওএফ