যে কারণে বিয়ের কথা জানাননি রেলমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে বিয়ে করার অনুমতি পেয়েছিলেন। অনুমতি পেয়ে বিয়েও করে ফেলেছেন। তবে বিষয়টি প্রথম দিকে চেপে গিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। কিন্তু কেন?
শনিবার (১২ জুন) বিকেলে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে এ কৌতূহল মিটিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিয়ে করেছি। তা অস্বীকার করার কিছু নেই। যা হয়েছে তা বলতে হবে। কিন্তু গণমাধ্যমকে বিয়ের বিষয়টি প্রথমে জানাইনি। কারণ, আগে তো প্রধানমন্ত্রীকে খুশির খবরটা জানাতে হবে। যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়নি, ততক্ষণ তাই অন্যদের কাছেও বিয়ে নিয়ে মুখ খুলিনি।
বিজ্ঞাপন
রেলমন্ত্রী জানান, শুক্রবার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোনে বিষয়টি জানান তিনি। এখন তাই বিয়ে নিয়ে রাখঢাক করছেন না।
তিনি বলেন, আমি চেয়েছি— প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে অন্যদের জানাব। তবে বিয়ের খবরটি যেহেতু সত্য ছিল তাই সরাসরি কখনও অস্বীকার করিনি। বিয়ে করেছি- সেটা বলতে তো বাধা নেই।
বিয়ে করার পর কোথাও তা চাউর হচ্ছে কি না খেয়াল রাখছিলেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যখন দুই-একটা জায়গায় রিপোর্ট (প্রতিবেদন) হয়েছে- তখন ভাবলাম-১৪ তারিখ পার্লামেন্ট আছে, তখন এ বিষয়ে কথা বলব। কারণ, টেলিফোনে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চাইনি। তবে শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার পরিস্থিতি বিবেচনায় টেলিফোনেই জানাতে হলো। বিয়ের ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে তার ঘনিষ্ঠ অনেকেও জানতেন না বলে তিনি জানান।
৬৫ বছর বয়সী রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গত ৫ জুন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রাজধানীর উত্তরায় কনের ভাড়া বাসায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
রেলমন্ত্রীর নতুন জীবনসঙ্গী ৩৬ বছর বয়সী আইনজীবী শাম্মী আকতার মণি। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মণিকে ঘরে তুলবেন রেলমন্ত্রী।
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার ইসলাম ৫৮ বছর বয়সে মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তারপর জীবনসঙ্গীহীন ছিলেন সুজন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছেন- তাদের সবাই বিবাহিত। জানা গেছে, রেলমন্ত্রীর বিয়েতে সন্তানদের সায় ছিল।
২০১১ সালে মণির প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদ হয়। তার একটি মেয়ে আছে। মণির প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর তিনি মেয়েকে নিয়ে থাকেন। মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষার্থী। রেলমন্ত্রীর আগের তিন সন্তানের সঙ্গে আরও একজন সন্তান যোগ হলো। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মণি দ্বিতীয়।
শাম্মী আক্তার বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় থাকেন। আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। হাইকোর্টে এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর জুনিয়র হিসেবে আইন প্র্যাকটিস করছেন। পাশাপাশি ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রসঙ্গত, পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে সুজন নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হলে রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে কথা হয়েছিল ঢাকা পোস্টের। তখন তিনি বলেছিলেন, আমার সঙ্গী দরকার। বন্ধুবান্ধবরা উপযুক্ত পাত্রী খুঁজছেন। আমার বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। রেলমন্ত্রীর পছন্দের তালিকায় একজন আইনজীবী রয়েছেন বলে সেসময় তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছিলেন। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনও সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রবীণ আইনজীবী। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আইনজীবী ছিলেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
পিএসডি/এইচকে