শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ নামক একটি আন্দোলন। শুক্রবার (১১ জুন) রাজধানীর শুক্রাবাদে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবিতে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ এর বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
তাদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে— বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় হিসাব ইউজিসিকে খতিয়ে দেখতে হবে; দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন টিউশন ফি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করতে হবে; গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং করোনাকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নিশ্চিতে প্রণোদনা প্রদান করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে শিক্ষার্থী ও সংগঠকরা বলেন, ২০১৫ সালে আমাদের অগ্রজরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সংকট নিরসন, বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও ছাত্র স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ প্লাটফর্মটি গঠন করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাখ্যান করছি। ২০১৫ সালে সরাসরি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাট প্রদানের কথা বলা হয়েছিল। এবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে করের টাকা আদায়ের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে, যা শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করার নীলনকশা।
তারা আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে পণ্যে রূপান্তর করার যে অপচেষ্টা তা রুখে দিয়ে ২০১৫ সালে সরকারকে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিলাম। এবারও পূর্বের মতোই আমরা বলতে চাই, শুধু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, যেখানেই শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করার ন্যূনতম চেষ্টা চলবে সেখানেই ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। যদি তাই হয়, তবে কি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকপক্ষ মুনাফা অর্জন করে? ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী বলা চলে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকপক্ষ যে মুনাফা অর্জন করছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা দেখতে পাচ্ছি, শিক্ষা খাতে প্রস্তাবিত বাজেট বিগত বাজেটের মোট জিডিপির তুলনায় ০.০৩৬ শতাংশ কম। এই বাজেট কোনোভাবেই শিক্ষাবান্ধব বাজেট হতে পারে না।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে যদি প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর বাতিলসহ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা না হয়, তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র স্বার্থবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’র সংগঠক মুক্ত রেদোয়ান, শাওন বিশ্বাস, শাহরিয়ার অপূর্ব, মো. রাকিব হাসান সুজন, প্রিতম ফকির, সালমান রাহাত, ২০১৫ সালের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সোহান তাসনিমা প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএসএইচ