ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের কর্মকাঠামো পরিবর্তনের দাবি
ন্যাশনাল সার্ভিস নামে প্রকল্পটি ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের অধীনে চালু করে সরকার। কিন্তু কার্যকর নীতিমালা ও কর্মকাঠামো না থাকায় প্রকল্পটি সফল হয়নি। তাই দ্রুত প্রকল্প সংস্কার ও কর্মকাঠামো পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীরা।
শুক্রবার (১১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল সার্ভিস পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে কর্মীরা বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো আগ্রহী শিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষকে গঠনমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করা। মাত্র ৩ মাসের প্রশিক্ষণ আর ২ বছরের কর্মসংযুক্তি ছিল ওই প্রকল্পের মেয়াদ। ২ বছরের কর্মসংযুক্তি প্রদান করে দেশের শিক্ষিত বেকার মানুষকে দিয়ে জাতিগঠনমূলক কাজ করাতে পারলেও দুই বছর যথেষ্ট সময় নয়। এ জন্য প্রকল্পটি সফলতার মুখ দেখতে পায়নি।
বক্তারা বলেন, সব থেকে দুঃখজনক হলো এই প্রকল্পে প্রশিক্ষণকালীন দৈনিক ভাতা ১০০ টাকা এবং কর্মকালীন দৈনিক ভাতা ২০০ টাকা। সামান্য অর্থের বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষিত ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের জীবন সাধারণ দিনমজুর ব্যক্তির থেকেও অসহায়। যে দেশে একজন দিনমজুর দৈনিক কাজের মজুরি পান ৬০০-৭০০ টাকা, সেখানে একজন শিক্ষিত ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী পান ২০০ টাকা। যা একজন শিক্ষিত বেকারের সঙ্গে তামাশা করার মতো। তাছাড়া একজন শিক্ষিত বেকার পরিবারের জন্য যেমন বোঝা তেমনি দেশের ও জাতির জন্য বোঝা।
মানববন্ধনে থাকা কর্মীরা মনে করেন, ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের নীতিমালা সংস্কার ও কর্মকাঠামোর পরিবর্তন করলেই ওই প্রকল্প সফলতা পাবে। তাই ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীরা ৯ দফা সুপারিশ করেছেন।
সুপারিশগুলো হলো :
ন্যাশনাল সার্ভিস অধিদফতর গঠন করে তার অধীনে প্রকল্প পরিচালনা করা; শিক্ষিত/উচ্চ শিক্ষিত আগ্রহী বেকার নারী-পুরুষকে জাতিগঠনমূলক কাজে আত্মনিয়োগ প্রদান করা; ওই প্রকল্পের প্রশিক্ষণের মডিউল পরিবর্তন করা; প্রশিক্ষণকালীন সময় ৬ মাস ও ভাতা ৪০০ টাকা করা; প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণ কোর্সের উপর ৫০ নম্বরযুক্ত স্ব-স্ব গ্রেডে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা; প্রশিক্ষণ কোর্সের ওপর পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কৃর্তকার্যদের কর্মসংযুক্তি প্রদান করা; ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি জাতীয়করণ করতে হবে।
কর্মকালীন দৈনিক ভাতা ৭০০ টাকা করা, কর্মকালীন দৈনিক ভাতা ৫০০ টাকা হারে মাসিক বেতন পরিশোধ করা এবং অবশিষ্ট ২০০ টাকা সঞ্চয় জমা রাখা যা চাকরির মেয়াদ শেষে একসঙ্গে নিয়োগপ্রাপ্ত ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীকে প্রদান করা; চাকরির মেয়াদ শেষে একজন কর্মীকে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনা জামানতে সুদবিহীন ঋণ সুবিধা প্রদান করা; উচ্চ শিক্ষিত সব ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের অন্যান্য চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং বাংলাদেশের সব উপজেলা ও জেলাকে পর্যায়ক্রমে ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল সার্ভিস পরিষদের সভাপতি মো. আতিক হাসান রাজা, সাধারণ সম্পাদক মো. আপন খালিদ প্রমুখ।
এমএইচএন/এসকেডি