পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের ফোন ছিনতাইয়ের চার দিন পর ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগ। কিন্তু শনাক্তের পাঁচ দিনেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। 

ডিএমপির মিরপুর বিভাগ পুলিশ বলছে, শনাক্তের ভিত্তিতে ওই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। তাকে পাওয়া যাবে এমন সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি সাহায্য নেওয়া হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তিরও। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা যাবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৮ জুন) ডিএমপির কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিমুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনাক্ত হওয়া ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের জন্য সম্ভাব্য অনেক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আমরা প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি তাকে গ্রেফতারের। আশা করি, তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা যাবে।

এদিকে মঙ্গলবার (৮ জুন) একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী নিজের ফোন ছিনতাইয়ের বিষয়ে বলেন, আমার ফোনটি এখনও পাওয়া গেল না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছে, ফোন ছিনতাইকারীকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে। গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছিলেন ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজনকে আমরা শনাক্ত করেছি। ছিনতাইয়ের ঘটনার আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। তার নাম ঠিকানা ও পরিচয় পুলিশের হাতে এসেছে।

তিনি বলেন, তাকে এখন গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ওই ব্যক্তি রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকায় ভাসমান অবস্থায় জীবন যাপন করতেন। বিজয় সরণি এলাকার উড়োজাহাজের ভাস্কর্যের নিচে প্রতি রাতে ঘুমাতেন।

পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাফরুল থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জিএম ফরিদুল আলম বলেছিলেন, ফোন উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। একাধিক লোককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এখনও উল্লেখ করার মতো কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি। ছিনতাই হওয়ার জায়গা ও এর আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। তবে সিসিটিভি ফুটেজে ছিনতাইয়ের ঘটনার তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

যেভাবে ঘটেছিল ঘটনাটি

গত ৩০ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে বিজয় সরণি সিগন্যালের জটে পড়ে মন্ত্রীকে বহনকারী গাড়ি। মন্ত্রী গাড়ির গ্লাস খুলে ফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় এক ছিনতাইকারী তার হাত থেকে মোবাইলটি ‘ছোঁ’ মেরে কেড়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে একই দিনে ডিএমপির কাফরুল থানায় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী একটি মামলা করেন।

চুরি যাওয়া ফোন নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ৩০ মে সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হয়ে ৬টা ৪৫ মিনিটে বিজয় সরণি এলাকায় গাড়িটি সিগন্যালে অপেক্ষা করছিল। এ সময় গাড়ির এসি বন্ধ করে দিয়ে কাঁচ নামিয়ে দেই।

এম এ মান্নান বলেন, গাড়িটা দাঁড়িয়ে ছিল। আমি পেছনের সিটে বসা ছিলাম, আমার হাতে মোবাইল ছিল। আমি মোবাইলে কিছু একটা করছিলাম। হয়তো নিউজ পড়ছিলাম। হঠাৎ ঝড়ের মতো এসে হাত থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে চলে গেল। আমি দেখিনি লোকটাকে। আমাদের লোক গাড়ি থেকে নামল। কিন্তু ওই ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে লোকটা কোথায় মিশে গেল!

এমএসি/এসকেডি