দুদকের প্রধান কার্যালয় ও সাউথ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন

সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন, তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ব্যাংকের শেয়ার গোপনে বিক্রি করে বিদেশে অর্থ পাচারের চেষ্টা করছেন বলে আশঙ্কা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। ২০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে।

এদিকে আমজাদ হোসেন যেন শেয়ার বিক্রি বা ট্রান্সফার করতে না পারে সে বিষয়ে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং জয়েন্ট স্টকের নিবন্ধক বরাবর চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চিঠির সূত্রে জানা যায়, আমজাদ হোসেন ও তার স্ত্রী বেগম সুফিয়া আমজাদ ও মেয়ে মিস তাজরির নামে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংকের অনেক শেয়ার রয়েছে। এছাড়াও তাদের নামে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শেয়ারও আছে। যা বিক্রি করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় তারা অর্থ দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টা করছেন। এমনকি দুদকের কাছে প্রমাণসহ এ বিষয়ে গোপন তথ্যও রয়েছে, যা মানিলন্ডারিং আইনে অপরাধ।

অন্যদিকে আমজাদ হোসেন ও তার পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের জন্যও চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এর আগে তার সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৭৬টি চিঠি দেয় দুদক।

২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি আমজাদ হোসেন, তার স্ত্রী ও কন্যার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় চিঠি দেয় দুদক। ঋণ জালিয়াতি, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলীয় কর্মকাণ্ডে অর্থায়নসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার বিষয়গুলো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। ওই চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।

সার্বিক বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও এস এম আমজাদ হোসেনকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও তিনি তার কোনো জবাব দেননি।

ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন। মেসার্স আলফা এক্সেসরিজ অ্যান্ড এগ্রো এক্সপোর্ট লিমিটেডের নামে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার অনিশ্চিত শ্রেণীকরণ ঋণ থাকা স্বত্বেও নিয়মবহির্ভূতভাবে আরো ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। দুদক থেকে এমন অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ২০১৭ সালের জুন মাসে একজন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

অভিযোগ অনুসন্ধানে ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল ইসলাম ও সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে অধিকাংশ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আমজাদ হোসেন।

আরএম/এমএইচএস