জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা যৌক্তিক
পৃথিবীর সব দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশেও জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা যথাযোগ্য যৌক্তিক।
সোমবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
হাছান মাহমুদ বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটার আইডি কার্ড এক বিষয় নয়। জাতীয় পরিচয়পত্র জন্মগ্রহণ করার পর থেকে আমৃত্যু পর্যন্ত দেওয়া হয়। দেশের সব নাগরিককে এই পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। পৃথিবীর সব দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে অথবা অন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে। এটা নির্বাচন কমিশনে থাকে না। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করে। যখন এটি একটি প্রকল্প ছিল ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য, তখন এটি নির্বাচন কমিশনের অধীনে ছিল এবং যৌক্তিক ছিল। যখন এটা জাতীয় পরিচয়পত্র করা হচ্ছে, তখন এটি সরকারের কাছে বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা যথাযোগ্য যৌক্তিক, পৃথিবীর সব দেশেই তাই।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার তথ্য-উপাত্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করে। বিদেশে যারা অবস্থান করে তাদের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখানে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া নেওয়া হয়েছে, এটা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই যথাযথ যৌক্তিক। এনআইডি দেওয়ার জন্য ১৮ বছর পর্যন্ত অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে যে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে এটি অবান্তর।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করার দাবি অমূলক জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া যেন সর্বোচ্চ চিকিৎসা পান এজন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে। খালেদা জিয়ার পছন্দ মতোই হাসপাতাল ও চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা করা হচ্ছে, এ কারণে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবাই পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছেন, যাতে তিনি ভালো থাকেন। এখন তিনি ঘরে অবস্থান করছেন এবং ভালো আছেন। গত ২০ বছর ধরে খালেদা জিয়ার এই সমস্যা চলছে। এই সমস্যার চিকিৎসা বাংলাদেশেই হচ্ছে, সুতরাং বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার দাবি অমূলক।
এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস আয়োজিত এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ বলেন, ধূমপান নিয়ন্ত্রণে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ধূমপান মুক্ত করা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এখন প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা করা হয়। এখন মানুষ আর প্রকাশ্যে তেমন ধূমপাম করে না। ধূমপানের মধ্যমে মানুষ মাদকাসক্ত হয়। মাদকাসক্ত ব্যক্তি শুধু তিনি নিজেকে ধ্বংস করেন তা নয়, তার পরিবারকেও ধ্বংস করে। বাবা-মায়ের অজান্তে ছেলেরা ধূমপায়ী হয়ে যায়, এজন্য খেয়াল রাখা জরুরি।
সভায় মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, তামাকে ৭ হাজার ৩৬৫টি রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গ্রহণের ফলে শরীরে নানা রকম জটিল রোগ ও ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে প্রায় এক লাখ মানুষ মারা যায় এবং সিগারেটে বাংলাদেশের জিডিপির ১ শতাংশ ব্যয় করা হয়।
সভায় সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম।
এমএইচএন/এসএসএইচ