টিকা এলেও প্রস্তুতিতে লাগবে আরও ২ মাস
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষ্যে ১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালা জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নীতিমালায় বলা হয়েছে, করোনা ভ্যাকসিন দেশে আসার পরও প্রয়োগের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে সময় লাগবে অতিরিক্ত আরও ২ মাস।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এই নীতিমালা জমা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুরুর ধাপে ৩ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে এ সংখ্যা। দ্বিতীয় ধাপে ৭ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ১১-২০ শতাংশ মানুষকে দেওয়া যাবে টিকা। পর্যায়ক্রমে ২১-৪০ শতাংশ, ৪০-৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা যাবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের অনুমতি পাওয়া টিকার ক্ষেত্রে প্রয়োগের আগে দেশে কোনো পরীক্ষা করা হবে না। তবে স্থানীয় পর্যায়ে অবিষ্কৃত টিকা কিংবা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছাড়া আমদানি করা টিকার ক্ষেত্রে শুরুর ৩ দফায় ল্যাব পরীক্ষা করা হবে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য থাকবে রিস্ক ম্যানেজম্যান্ট টিম।
নীতিমালার বড় একটি অংশে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে টিকার নিরাপত্তা ও সংরক্ষণের বিষয়টি। কতো সংখ্যক কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করা হবে, সেটিও পরামর্শ দেওয়া হয় নীতিমালায়। রোহিঙ্গাদের টিকা দিতে আলাদা একটি কমিটি গঠন করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালায় ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়টি তদারকি করতে পৃথক একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করা হয়। একই সময় উল্লেখ করা হয়, দেশে ভ্যাকসিন আসার আগে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে। তবে ভ্যাকসিন আসার পরও এর লোকবল নিয়োগ, কারিগরি সহায়তা, কাগজপত্র প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হবে ৮ সপ্তাহ সময়।
নীতিমালা প্রসঙ্গে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘নীতিমালা প্রস্তুত করে মন্ত্রাণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের এই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে মন্ত্রণালয়।’
সোমবার (০৪ জানুয়ারি) অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও উপ-পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় আমাদের ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা এই ভ্যাকসিনের সব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছি এবং ভ্যাকসিনটি জরুরি ব্যবহারের বিষয়ে একটি অনাপত্তিপত্র (এনওসি) জারি করেছি।
আইয়ুব হোসেন বলেন, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে এনওসি সংগ্রহ করেছে এবং এটি ব্যবহার করে তারা এখন ভারত থেকে ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।
টিআই/জেডএস