জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্মবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার (২৫ মে, ১১ জ্যেষ্ঠ)। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এ দিনে বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবছর ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও এ বছরও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে সকালে বিভিন্ন সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

আরও পড়ুন: নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (২৪ মে) বলা হয়েছে, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ সকাল সাড়ে সাতটায় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং রাত ৮টা ৩০ মিনিটে আন্তর্জাতিক নজরুল চর্চা কেন্দ্র আয়োজিত প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।

কবির জন্মদিন উপলক্ষে সোমবারই শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘আমিই নজরুল আন্তর্জাতিক নজরুল উৎসব’। নজরুলের সাম্যবাদ নিয়ে এ আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংগঠন ‘মুক্ত আসর’। উৎসবে বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পর্তুগাল থেকে ৩২ জন নজরুল গবেষক, লেখক ও নজরুল সংগীতশিল্পী অংশগ্রহণ করছেন।

দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ছাড়াও বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন ও বেতার বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। কবির জন্মদিনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হাামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাংলা সাহিত্যে নজরুল বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিণী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। 

নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি দেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১২ ভাদ্র ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নজরুল। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

এসএইচআর/এএসএস/আরএইচ