পিলখানা হত্যাকাণ্ড
বিচারের ইঙ্গিত না পেলে শাহবাগ অবরোধের হুঁশিয়ারী
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিডিআর জেলবন্দীদের মুক্তি, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ‘মিথ্যা’ মামলা বাতিল, চাকুরিচ্যুতদের চাকুরিতে পুনঃবহাল ও পুনঃবাসন এবং প্রজ্ঞাপনের ‘ঙ’ ধারা বাতিলসহ পিলখানা হত্যা মামলায় পুনঃতদন্ত ও ন্যায় বিচারের ইঙ্গিত না পেলে শাহবাগ ব্লকেডে যাবেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিডিআর) পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন থেকে ফিরে এই ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে শুনতে চেয়েছিলাম আর যেন শুনানি পেছানো না হয়। কারণ ৫ আগস্ট পর অনেকবার শুনানি পেঁচানো হয়েছে। কালকের ভেতরে (বৃহস্পতিবার) যদি ন্যায় বিচারের কোন ইঙ্গিত না দেখি শাহবাগ ব্লকেড (অবরোধ) করা হবে এবং আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে। সেই সঙ্গে বুধবার সারা রাত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।”
মাহিন সরকারের এমন ঘোষণার পরপরই শহীদ মিনারের পাদদেশে অবস্থান নেন বিডিআর পরিবারের সদস্যরা। রাতে শীত উপেক্ষা করে শহীদ মিনার এলাকা জুড়ে তারা অবস্থান নিয়েছেন। এসময় অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন তারা। পাশাপাশি ভুক্তভোগী বিডিআর পরিবারের সদস্যরা ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর-বিডিআর’, ‘আমি কে তুমি কে, বিডিআর-বিডিআর’, ‘দেশপ্রেমিক বিডিআর, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘বিডিআরে ন্যায্য হিস্যা, বুঝিয়ে দাও-দিতে হবে’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে-চলবে’, ‘মুক্তি-মুক্তি, মুক্তি চাই বিডিআরের মুক্তি চাই’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
শাহবাগ অবরোধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ৪৬ ব্যাচের সৈনিক কে. রাজ্জাক বলেন, “আমরা তিন দাবিতে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পক্ষে ইতিবাচক কোন সিদ্ধান্ত না আসছে আমরা শহীদ মিনার থেকে সরছি না। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার মধ্যে যদি আমরা কোন ন্যায় বিচারের ইঙ্গিত না পাই, প্রয়োজনে আমরা মাহিন সরকারের নেতৃত্বে শাহবাগ ব্লকেড করা হবে।”
বিডিআর ৬৮ ব্যাচের সৈনিক কাজী হারুন বলেন, “টানা ৬৫ দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছি, নানাভাবে সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এখনও সেইসব মনে হলে শিউরে ওঠি। শেখ হাসিনার শাসনামলে মুখ খুলতে পারিনি, এ সরকারের কাছে প্রত্যাশা যেন আমরা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয়।”
আরেক বিডিআর সৈনিক আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, “আমরা ন্যায়-বিচার নিশ্চিত করা চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়-বিচার নিশ্চিত না করা হচ্ছে, আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।”
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন বিডিআর পরিবার ও ভুক্তভোগীরা, পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বেলা সাড়ে ১২টার পর তারা শহীদ মিনার থেকে যমুনার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন। পরে শাহবাগ পর্যন্ত এলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে শাহবাগ থানা ও জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেয় তারা। এক পর্যায়ে মাহিন সরকারের নেতৃত্বে দুপুর দেড়টায় ৯ সদস্যেরএকটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনায় যায়। পরে সাড়ে পাঁচটার দিকে ফিরে এসে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে যমুনা ত্যাগ করে শহীদ মিনারে ফিরে যান।
কেএইচ/এসএমডব্লিউ