স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বলে দাবি করেছেন ভারতের সাংবাদিক পালকি শর্মা। নাসিমুল গনিকে নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিক মিথ্যাচার করেছেন জানিয়ে এর প্রতিবাদ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের (সিএ) প্রেস উইং ফ্যাক্টস। 

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস নিজেদের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পালকি শর্মার দাবিটি ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে উল্লেখ করেছে। 

নাসিমুল গনিকে নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের মিথ্যাচার

রোববার সন্ধ্যায় ফার্স্টপোস্ট নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল ও বিডিডাইজেস্ট নামের একটি সংবাদ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পালকি শর্মা দাবি করেন, জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তাতে প্রমাণ হিসেবে ২০০৮ সালে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাত দেওয়া হয়েছে। ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘হিযবুত তাহ্‌রীর লিডারস হেল্ড ওভার মিলিটেন্সি।

প্রতিবাদে যা বলছে সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস

ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা নাসিমুল গনি (Nasimul Gani) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি (Nasimul Ghani) আলাদা ব্যক্তি। হিযবুত তাহ্‌রীরের নেতা নাসিমুল গনি ব্রিটিশ নাগরিক, যার প্রকৃত নাম নাসিম গনি (Nasim Gani)। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি বাংলাদেশের একজন শীর্ষ আমলা। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক, তার কোনো দ্বৈত পাসপোর্ট নেই, তিনি অন্য কোনো দেশে বসবাসও করেন না।

ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। 

পোস্টে বলা হয়, হিযবুত তাহ্‌রীর বাংলাদেশে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। কোনো সরকারি কর্মকর্তার নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নাসিমুল গনি ছাত্রাবস্থায়ও কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ পুলিশ হিযবুত তাহ্‌রীরের বেশ কয়েকজন সদস্যকে অবৈধ কার্যকলাপের দায়ে গ্রেপ্তার করেছে। সংগঠনটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং মনে করে, হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনিকে জড়িয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৈরি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে যে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে, সেটার অংশ হিসেবেই এই মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এমএসএ