কক্সবাজারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বেগবান করতে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) তিনটি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তিন প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে মোট দুই হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সংগতি রেখেই মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর করা হচ্ছে। প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২০ থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরের কার্যক্রম শেষ করার কথা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মাঝামাঝিতে এ টার্মিনালে কাজ শুরু হতে পারে। বন্দরটি হয়ে গেলে ৮ থেকে ১০ হাজার কনটেইনার নিয়ে এখানে জাহাজ আসতে পারবে। আমাদের কনটেইনার পরিবহনের চাহিদা অনেক বাড়ছে। প্রাথমিকভাবে ৮ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করার লক্ষ্যে এই প্রকল্পের ডিজাইনের কাজ চলছে। পরে জেটি বাড়লে সক্ষমতা বাড়বে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, বন্দরের জেটি ৪৬০ মিটার লম্বা করা হচ্ছে। বর্তমানে এটি সরাসরি নদীপথে যুক্ত আছে। পরে সড়ক ও রেলপথ যুক্ত হবে। বড় জাহাজে কনটেইনার আসলে খরচ কমে যাবে, ব্যবসায়ীরা আকৃষ্ট হবেন। ২০২৬ সালের মধ্যে সড়ক যোগাযোগও হয়ে যাবে। মোট ২৬ কিলোমিটার রাস্তাসহ মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণে খরচ হবে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ৮ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা শুধু বন্দরের জন্য খরচ হবে। এই অর্থের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে টাকা দেওয়া হবে জমি কেনার জন্য।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প- আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে দেখা গেছে, বন্দর উন্নয়নের এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পে মোট বরাদ্দ রয়েছে ৪২৯ কোটি টাকা। বরাদ্দ যেহেতু তিনগুণের বেশি বাড়ছে, সেহেতু আশা করা হচ্ছে আগামী অর্থবছরে বন্দরের কাজ পুরোদমে চলবে।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন (সড়ক ও জনপথ অংশ) প্রকল্প- চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়নের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এই প্রকল্প মোট ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে। চলতি অর্থবছর এ প্রকল্পে খরচ করা হচ্ছে ৮৮ কোটি টাকা।

মাতারবারি বন্দর উন্নয়ন (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অংশ) প্রকল্প- ২০২১-২২ অর্থবছরে এ প্রকল্পটি মোট বরাদ্দ পাচ্ছে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ৩৪১ কোটি টাকা। বন্দরের কাজ নির্ধারতি সময়ের মধ্যে শেষ করতে চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন প্রতিটি প্রকল্পেই বরাদ্দ বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেগবান করতে বন্দরগুলোর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সব বন্দরের উন্নয়ন করছি। বন্দরগুলো যখন পুরোদমে চালু হয়ে যাবে তখন দেশের অর্থনীতির পুরো চিত্রই পাল্টে যাবে। এজন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ প্রকল্পগুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে চাহিদা মতো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এসআর/ওএফ