দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির তাগিদ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ যে কোনও দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাদেরই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিষয়ে এডভোকেসি কৌশল প্রণয়ন বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা একথা বলেন।
বক্তারা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্মশালা থেকে উঠে আসা কৌশলগত দিকনির্দেশনা থেকে উপকৃত হবে। এতে করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২২ ডিসেম্বর) অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, সিবিএম গ্লোবাল, কারিতাস বাংলাদেশ এবং নবলোক পরিষদের সহযোগিতায় আযোজিত জাতীয় কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
কর্মশালার লক্ষ্য ছিল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস (ডিআরআর) এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন (সিসিএ) বিষয়টি প্রচারের জন্য একটি এডভোকেসি কৌশল তৈরি করা। এই উদ্যোগ সাতক্ষীরা ও খুলনায় বাস্তবায়িত দুটি চলমান প্রকল্পের অংশ।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক ফজলে সিদ্দিক মো. ইয়াহিয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা।
রেজওয়ানুর রহমান তার বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে একটি এডভোকেসি কৌশল তৈরির করার এই কর্মশালাটিকে একটি অনন্য এবং সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসাবে বর্ণনা করেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্মশালা থেকে উঠে আসা কৌশলগত দিকনির্দেশনা থেকে উপকৃত হবে যাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এতে করে প্রায় ৫ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন উদ্যোগ থেকে সরাসরি উপকৃত হবেন।
বিশেষ অতিথি ফজলে সিদ্দিক মো. ইয়াহিয়া বলেন, দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ঝুঁকি কমানোর জন্য এডভোকেসি কৌশল তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কর্মশালার ফলাফল মন্ত্রণালয় এবং প্রাসঙ্গিক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কাছে পৌঁছে দিতে তিনি আয়োজকদের পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন
তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তিমূলক দুর্যোগ ঝুকি হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন অগ্রসর করার জন্য জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অ্যাকসেস বাংলাদেশকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আলবার্ট মোল্লা বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ওপর দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অসম প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বলেন, গত পাঁচ দশকে সাধারণত প্রতি ২-৩ বছরে একটি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানে, তবে ২০২৩ সালে দেশটি এক বছরে চারটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছিল।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন ডিআরআর এবং সিসিএ ব্যবস্থা থেকে বাদ না পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
এমএম/টিএম