উত্তরায় রেস্টুরেন্টে আগুন
ভবনটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, দেওয়া হয়েছিল নোটিশ : ফায়ার সার্ভিস
রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের লাভলীন রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস বলছে, কোনো ধরনের অগ্নি নিরাপত্তা সামগ্রী না থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণই ছিল। এ জন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভবনটিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
সংস্থাটির প্রাথমিক ধারণা, গ্যাসের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। ঘটনার পর তারা রেস্টুরেন্ট মালিক কিংবা ভবন মালিককে খুঁজে পাননি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের একটি পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় লাভলীন বাংলা রেস্টুরেন্টে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় বেলা ২টা ২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা ভবনটিতে ফায়ার ফাইটিং- কোনো ইক্যুইপমেন্ট পাইনি। আমরা আমাদের জানামতে, ভবনটিতে নোটিশ দিয়েছিলাম। এখানে ফায়ার সেফটি প্ল্যানও নেই। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আরও তথ্য প্রদান করতে পারবো। বহুতল ভবনটি আবাসিক হলেও সেখানে রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
তিনি বলেন, আগুনের শুরুতেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান, আগুন ডেভলপমেন্ট স্টেজে চলে গেছে। এটা গ্যাসের লিকেজ থেকে যেহেতু হয়েছে, সুতরাং নিচের ফ্লোরে গ্যাসের উপস্থিতি ছিল। এখানে অনেক পেট্রোলিয়ম দ্রব্যাদি ছিল। ভবনটিতে রেস্টুরেন্ট, জিম, বিউটি পার্লার ছিল। উপরে মানুষের বসবাস ছিল। পাঁচতলা ভবনটির ছয়তলাটি টিনশেড করা ছিল।
ভবনটি থেকে সাতজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আগুন নির্বাপণের পর ভেতরে তল্লাশি করে কাউকে পাওয়া যায়নি। আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
অগ্নিকাণ্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এটার একটি মাত্র সিঁড়ি রয়েছে। আমরা বাইরে থেকে বৈদ্যুতিক তারের কারণে টিটিএল (টার্ন টেবল লেডার) সেট করতে পারছিলাম না।
রেস্টুরেন্টে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার হচ্ছিল, এটার অনুমোদন আছে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, এলএনজি গ্যাসের চেয়ে সিলিন্ডার গ্যাস বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অল্পতেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা এসে দেখেছি নিচের তলা এবং দোতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এজন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। আর গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে অনুমোদনের বিষয়গুলো বিস্ফোরক অধিদপ্তর বলতে পারবে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে সিটি করপোরেশন দেখে। তারা বলতে পারবে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর আমরা ভবন মালিককে খুঁজেছি, পাইনি। আমাদের পরিদর্শকদের কাজই ভবন পরিদর্শন করে নোটিশ দেওয়া। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাদ বাকি তথ্য নিশ্চিত হতে পারবো।
এমএসি/এমএসএ