বিজয়ের ৫৩তম বর্ষ উদযাপন করছে বাংলাদেশ। হাতে লাল-সবুজের পতাকা। মুখেও রং তুলিতে কেউ কেউ এঁকেছেন জাতীয় পতাকা। বিলাসবহুল গাড়ি কিংবা বাড়ির ছাদ সবখানেই আজ লাল-সবুজের মেলা। বাঙালি জাতিসত্তার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন বিজয় দিবস ঘিরে এভাবেই সেজেছে রাজধানী। বিজয়ের এ উল্লাস মিছিলে যোগ দিয়েছেন বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, গুলিস্তান, শাহবাগ ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিজয় দিবস উদযাপনে প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে শহীদ মিনার এলাকায় ঘুরতে এসেছে ছোট্ট শিশুরাও। মেয়েরা লাল-সবুজ রঙের শাড়ি এবং ছেলেরা সবুজ পাঞ্জাবিতে সেজে দিনটিকে উদযাপন করতে শহীদ মিনারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে এসেছেন। কেউ কেউ ছোট শিশুকেও লাল-সবুজের পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরিয়ে এনেছেন শহীদ মিনার চত্বরে।

এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে পতাকা বিক্রির অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের দেখা গেছে। ছোট একটি পতাকা ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানের পতাকা ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাপড়ের পতাকা ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ১০ টাকা দরে মাথায় বাঁধার ফিতা এবং ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিভিন্ন ব্রেসলেট বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মুখে রং তুলিতে পতাকা এঁকে দিচ্ছেন চিত্রশিল্পীরা।

শহীদ মিনারে পরিবারসহ ঘুরতে আসা আহনাফ আবিদ বলেন, প্রতি বছর আমরা বিজয় দিবসে ঘুরতে আসি। এবারের বিজয়টা একটু ভিন্ন। ৭১’ আর ২৪’ এর বিজয় এবার। এই শহীদ মিনার থেকেই ২৪’ এর বিজয়ের ঘোষণা আসে। অবসান হয় আওয়ামী শাসনের।

আবিদ বলেন, বিজয় দিবসে একটাই চাওয়া– দেশটা কোনো হায়েনাদের হাতে যেন আর না যায়। এ দেশকে সবাই মিলে গড়তে হবে।

শারমিন আক্তার নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, খুব সকালে বের হয়েছি। বিজয়ের সকাল আসলে একটু ভিন্ন অনুভূতির জোগান দেয়। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের এ ভূখণ্ড পৃথিবীর শেষ দিন অবধি টিকে থাকুক স্বমহিমায়।

এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিজয় দিবসের দিন বিকেলে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারগুলোকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষ্যে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

এমএম/এসএসএইচ