অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ
‘সবার নামে হত্যা মামলা হওয়ায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে’
সবার নামে হত্যা মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃত অপরাধীরা পার হয়ে যাচ্ছে, তাদের জামিন হয়ে যাচ্ছে। আদালত কি স্বাধীনভাবে কাজ করছে নাকি আগের মতোই আদেশক্রমে রায় দিচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (পিআইবি) এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
বিজ্ঞাপন
অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা বেড়েছে। ফলে ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশন কী করছে? সরকারের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টি ও অস্বীকৃতির ভাব থাকলে সমস্যা বাড়বে।’
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) আয়োজনে ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ: মানুষ কী ভাবছে’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে পালস সার্ভের (জনমত জরিপ) দ্বিতীয় ধাপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের তিনটি সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমত, স্বৈরাচারী শাসককে সরাতে পারাটা একটা বড় সাফল্য। বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নির্যাতন বন্ধ হয়েছে, এটা আরেকটা বড় সাফল্য। তৃতীয় সাফল্য হচ্ছে, অনেক ধরনের কথাবার্তা, বিতর্ক হচ্ছে, সবাই মতামত দিতে পারছে, অনেক সংগঠন তৈরি হচ্ছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে একটি বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তর ঘটাতে চায়। তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে যে বদনামটা ভারত থেকে ছড়ায়, যে রকম কথা বলা হয় যে এটা ইসলামিস্ট টেকওভার হয়েছে, কিছু জিনিস কেবল সময়ই বলতে পারে। আমাদের সরকার খুবই প্রগ্রেসিভ ও লিবারেল সরকার। এই সরকার দেশকে খুব ব্রিলিয়ান্টলি একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখান থেকে রাজনৈতিক দলগুলো আরও এগিয়ে নিতে পারবে।
আরও পড়ুন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘চোরতন্ত্রের জননী’ আখ্যা দেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম। এই সরকার অভ্যুত্থানকে দৃঢ়ভাবে প্রতিনিধিত্ব করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কিন্তু এতো ভঙ্গুর একটা জিনিস আমরা হাতে পেয়েছি আর এতো বড় প্রত্যাশা- এই দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার একটা সংগ্রাম আছে। কিন্তু অনেক বছর পর সবাই অনেক স্বাধীনতা পাচ্ছে, অনেক বেশি আওয়াজ। দায়িত্বশীল কথাগুলো যাদের মুখ থেকে আসার কথা, তারাও অনেক ক্ষেত্রে জনতুষ্টিবাদী কথাবার্তা বলছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ এই ধারণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বিশেষ করে সেপ্টেম্বরের পর পরিস্থিতি নিকট অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ইউটিউবাররা অনেকক্ষেত্রে পপুলিস্ট ক্লিকবেটিং এজেন্ডা সেট করে দিচ্ছেন। সেটা সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে। আগে তারা যখন হাসিনাবিরোধী ছিল, আমরা হয়ত তালি দিয়েছি। কিন্তু এখন এসে তারা যে ধরনের ফিয়ার মঙ্গারিং (ভয় তৈরি) করছেন, সেটা সত্যিকার অর্থে একটা অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এমএন