ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হেলমেট বাহিনীর সেই যুগের অবসান ঘটেছে।

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সদস্য সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ছিলেন ডিএমপি কমিশনার।

অতীতে কয়েকটি আন্দোলনে সাংবাদিকদের ওপর হেলমেট বাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল কিন্তু সুরাহা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে যুগেরও অবসান ঘটেছে। হেলমেট বাহিনীরও অবসান ঘটেছে।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, মারধর-গুলির ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনায় ডিএমপি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো সেবা করতে চাই। সাংবাদিকদের ওপর হামলা কেন করবো? শুধু সাংবাদিক কেন কোনো মানুষকেই তো পুলিশ নির্যাতন বা হামলা করতে পারে না।

তিনি বলেন, আমার পুলিশ সদস্য সব সময় ডিসিপ্লিনে থাকবে, হামলা মামলা বা কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ বা অপেশাদার আচরণ কেন করবে?

ডিএমপি কমিশনার ক্র্যাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এরকম কোনো ঘটনা যদি ঘটে থাকে বা ঘটে তাহলে আমার নজরে আনবেন; আমি তদন্ত করবো, ব্যবস্থা নেবো। ডিএমপি কমিশনার হিসেবে  আমি গত জুলাই-আগস্টে ধ্বংসযজ্ঞ, নানা ধরনের ক্ষতিকর কার্যাবলীর জন্য ঢাকাবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা নতুন করে ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। জুলাই-আগস্টের ঘটনার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায়, ঢাকাবাসীর জীবন ও সম্পদ অনিরাপদ হয়ে যায়। আমি ঢাকাবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমার সহকর্মীদের নিয়ে সবার সহযোগিতায় ঢাকাবাসীর জানমালের হেফাজত করে যাবো। ইতোমধ্যে আমি আমার সহকর্মীদের মেসেজ দিতে সক্ষম হয়েছি যে আগের মতো আর ঢাকাবাসী সেবা প্রদানে কার্পণ্য করা যাবে না। 

আগামী ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ ডিসেম্বর ও ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় বহু মানুষের সমাগম হবে। আমি আশা করি, এসব জমায়েত অনেক আনন্দের সঙ্গে নিরাপদভাবে এদিনগুলো উদযাপন করবেন। এখন পর্যন্ত এসব দিনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই, কোনো আশঙ্কা নেই। 

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ক্র্যাব পরিবারের ছয় সদস্যের সন্তানকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ায় বৃত্তি দেওয়া হয়। এছাড়া ক্র্যাবের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১০টি ইভেন্টে ৩২ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম মানিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন, ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন। আরও উপস্থিত ছিলেন, ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দিপন দেওয়ান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নেহাল হাসনাইনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। 

জেইউ/এসএম