সততার উজ্জ্বল নজির গড়লেন রিকশা চালক বাদশা মিয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় হারিয়ে যাওয়া ম্যানিব্যাগ, ডেবিট কার্ড, এনআইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিরে পেয়েছেন আইনজীবী খোন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে ৭০ বছর বয়সী রিকশা চালক ওই আইনজীবীর হারিয়ে যাওয়া সবকিছু ঠিকঠাকভাবে ফিরিয়ে দেন।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে আইনজীবী খোন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, বুধবার (২৭ নভেম্বর) এলিফ্যান্ট রোড থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সময় আমার মানিব্যাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় হারিয়ে যায়। মানিব্যাগে ব্যাংকের ডেবিট কার্ড, এনআইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আইডি কার্ড, ঢাকা আইনজীবী সমিতির আইডি কার্ড, ঢাকা ট্যাক্সেস বারের আইডি কার্ড, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের আইডি কার্ড, মিনা বাজার, স্বপ্ন ও আগোরার মেম্বারশিপ কার্ড, দুটি পেনড্রাইভ-সহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাগজপত্র ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেটি পাইনি। যে কারণে কাল সারাদিনই মনটা অনেক বিষণ্ন ছিল। স্বাভাবিক অনেক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে, অনেক শিডিউল বাতিল করেছি।
আরও পড়ুন
‘এরইমধ্যে গতকাল রাতে হঠাৎ করেই সাভার থেকে একটি ফোন কল পাই। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া একজন ছাত্র আমাকে জানায় তার বাবা একজন রিকশাচালক। তিনি টিএসসি এলাকায় আমার মানিব্যাগটি পেয়েছেন এবং তিনি সেটি সঙ্গে করে সাভারে তার বাসায় নিয়ে গেছেন। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আইডি কার্ডে আমার নাম্বার দেখে আমাকে ফোন করেছেন। আজ সকাল সাড়ে আটটায় এলিফ্যান্ট রোডে সেই রিকশাচালক ৭০ বছর বয়সী বাদশা মিয়া আমার সঙ্গে দেখা করে আমার মানিব্যাগসহ সব জিনিসপত্র ফেরত দিয়েছেন। বাদশা মিয়ার কাছে তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে জানলাম। এটাও জানলাম যে তার ছেলে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার পরিবারকে আমি তাৎক্ষণিকভাবে যতটুকু সম্ভব আর্থিক সহায়তা দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও করব... ইনশাআল্লাহ। আপনারাও কেউ সাহায্য করতে চাইলে আমাকে জানাবেন, ওনার ফোন নাম্বার দিয়ে দেব।’
আইনজীবী খোন্দকার হাসান বলেন, বাদশা মিয়ার মতো সৎ মানুষ আছে বলেই আজও হয়ত বাংলাদেশ টিকে আছে। আজও আমরা স্বপ্ন দেখি একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর। অন্য কেউ মানিব্যাগটি পেলে হয়ত কার্ডগুলো ফেলে দিত। তাতে সাময়িকভাবে আমার পেশাগত এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডে সমস্যা সৃষ্টি হতো। কিন্তু বাদশা মিয়া যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরনের মানুষদের পাশে সবসময় থাকা প্রয়োজন। বাদশা মিয়ার মতো মানুষগুলোই আমাদের অনুপ্রেরণা এবং শক্তি। তারা আছে বলেই আমরা আজও সমাজ এবং দেশকে ভালো করার নতুন স্বপ্ন দেখতে পারি।
এমএইচডি/জেডএস