সারজিস-হাসনাতকে হত্যাচেষ্টা, যা বললেন সঙ্গে থাকা সাকিব
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটে।
হাসনাত-সারজিসদের সঙ্গে থাকা আহমাদ উল্লাহ সাকিব ফেসবুকে এক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজি রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা করা হয়। আমরা বাইক নিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলে আমাদেরও চাপা দেয়। আল্লাহর কৃপায় বেঁচে ফিরছি।’
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. তরিকুল ইসলাম জানান, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের কবর জিয়ারত করে ঢাকায় ফিরছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজি রাস্তার মোড়ে তাদের ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বহরে থাকা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে গাড়ির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চালকসহ ট্রাকটিকে লোহাগাড়া থানা পুলিশ আটক করেছে।’
এর আগে বুধবার দুপুরে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে ওই জানাজায় অংশ নেন হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলম। পরবর্তীতে দাফনের পর কবর জিয়ারত করেন তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী।
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন। ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন তিনি। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান।
গত সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা চিম্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন (মঙ্গলবার) কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় তাকে। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তারা। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীরা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এদিকে আজ বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ। তবে এখনো আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ২০ জন পুলিশের ওপর হামলা করেছে এবং ৭ জন আইনজীবী আলিফ হত্যায় জড়িত।
এমজেইউ