বাংলাদেশের মাটিতে বসে দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশনায় ইসকন বাংলাদেশে বসে দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছে। তারা বাংলাদেশকে ভাগ করে পৃথক রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিমদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর পরিকল্পনা কোনোদিন বাস্তবায়ন হবে না। 

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত শোক ও সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ধৈর্য ধারণ মানে দুর্বলতা নয়, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে হত্যার পরও আমরা ধৈর্য ধারণ করেছি। তার মানে আমাদের এই ধৈর্যকে আপনারা দুর্বলতা হিসেবে নেবেন না। ৫ আগস্টের পরও কিন্তু এই ছাত্রজনতার লড়াই বন্ধ হয়নি। আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের দিকে হাত বাড়ালে সেই হাত ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যেমন একটি ধর্মীয় সংগঠন, খেলাফত মজলিশ যেমন একটি ইসলামী সংগঠন, তেমনি হিন্দু জাগরণী মঞ্চ এবং ইসকন হিন্দুধর্মীয় সংগঠন। তার মানে এই ইসকন এবং হিন্দু জাগরণী মঞ্চ সমস্ত হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এই হিন্দুবাদী সংগঠন দুটি জঙ্গি সংগঠন, যা হিন্দুদের মধ্যে কোমলমতি কিশোর-কিশোরীদেরকেও উগ্রবাদীতায় লিপ্ত করার চক্রান্তে লিপ্ত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা বলেন, এই সন্ত্রাসী সংগঠন দুটি শুধু এ দেশের মুসলমানদের ওপর আঘাত করেনি, তারা আবহমানকাল ধরে চলে আসা সনাতনীদের মন্দির দখল করেছে। ইসকন শুধু সাইফুল ইসলাম আলিফকেই হত্যা করেনি, পাহাড়ে নওমুসলিম ইমামকেও হত্যা করেছিল। তাই আমরা জীবন দিয়ে হলেও এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব।

তিনি বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষ নজিরবিহীন ধৈর্য প্রকাশ করেছে। নাগরিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করছে। এবার সরকারকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম চিন্ময় দাসের প্রোগ্রাম সনাতনীদের প্রোগ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করে। অথচ এ দেশের লাখো হিন্দুর প্রতিনিধি চিন্ময় দাস নন। আপনারা হেফাজতের আন্দোলনের সময় বলেননি মুসলমানদের আন্দোলন। সাঈদীর গ্রেপ্তারের সময় তো বলেননি মুসলমান নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। তাহলে চিন্ময়কে কেন হিন্দু নেতা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন! 

এ সময় কেন্দ্রীয় সংগঠক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, পতিত সরকারের ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের মানুষ বাস্তবায়ন করতে দেবে না। নাগরিক তাদের দায়িত্ব পালন করছে, সরকার এবার আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন।

গোয়েন্দা বিভাগ কেন কাজ করছে না বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই সঙ্গে প্রশাসনের সবগুলো ইউনিটকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। 

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, সমম্বয়ক মাহিন সরকার, আহনাফ সাইদ খান প্রমুখ।

টিআই/এমজে