অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) আইনজীবী সমিতির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সমিতির সদস্য হত্যার প্রতিবাদে বুধবার আদালত বর্জন করবেন আইনজীবীরা। আমরা এদিন আদালত চত্বরে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করব।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের অনুসারীরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা নাম জালাল উদ্দিন। ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান। 

এর আগে, সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিম্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। সড়কপথে ইসকনের আলোচিত এই সংগঠককে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। সোমবার রাতে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে রাখা হয়।  

এরপর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ মোতাবেক চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে জড়ো হতে থাকে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা। আদালত জামিন না মঞ্জুরের আদেশ দিলে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ ও বিজিবি মিলে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। 

এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।

এমআর/এমজে