ট্রাইব্যুনালে এসে অঝোরে কাঁদলেন রেহানের মা
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে মৃত্যু হয়েছে বুয়েট শিক্ষার্থী রেহান আহসানের। তার ১১ বছর পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন মা ইফফাত আরা।
এতদিন তিনি ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার সাহস পাননি বিভিন্ন চাপে— এমন কথা বলতে বলতে ট্রাইব্যুনালে এসে অঝোরে কাঁদছিলেন এই মা। পাশাপাশি ছেলের বিভিন্ন বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যার শিকার হওয়ার’ অভিযোগে বুয়েট শিক্ষার্থী রেহান আহসানের পক্ষে তার মা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
রোববার (২৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রেহান আহসানের মা ইফফাত আরা অভিযোগ দায়ের করেন। তার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন অ্যাডভোকেট এস এম তাসমিরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন
জানা গেছে, নওগাঁ শহরের মধ্যপাড়া মহল্লার ব্যবসায়ী এ কে এম মামুন আহসানের ছেলে রেহান আহসান ছিলেন বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র।
ইফফাত আরা বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হত্যাকাণ্ডের পরের দিন ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে আমার ছেলের লাশ শনাক্ত করতে পারি। তখন আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। তখনো রক্ত ঝরছিল তার, আমার ছেলেকে এভাবে পাবো কোনোদিন ভাবতে পারিনি। ওর দেহটা পড়েছিল। আমার ছেলেটা ছিল ওর বাবার কলিজার টুকরা। ওর বাবা ওর শোক সহ্য করতে পারেনি, পরের বছরে ওর বাবাও মারা গেছে। আমাদের প্রতিটা দিন যেন এক একটি ৫ মে। আমাদের ঘরের শূন্যতা, সব জায়গাতে শূন্যতা। তবুও এতদিন সাহস করে ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে মামলা বা অভিযোগ জানাতে পারিনি। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের পর আমরা আজ যখন বাক স্বাধীনতা পেয়েছি, তখনই ছুটে এসেছি অভিযোগ জানাতে।
তিনি বলেন, আমার ছেলের মৃত্যুর পর আমরা যখন শোকে কাতর, সেই মুহূর্তেই সেই সময়কার প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে খুব চাপ দেওয়া হয়েছিল দ্রুত লাশ দাফন করে ফেলার জন্য। পরে আমাকে থানা থেকে ফোন করে বারবার জেরা করা হতো, আমার ছেলে কোন রাজনৈতিক আদর্শের? সে একজন ধর্মভীরু মুসলমান ছিল, ইসলামিক জ্ঞান চর্চা করতো।
এএসএস/এমএ