জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবিরকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে এ তথ্য জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এরই মধ্যে এসবি ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এসবি আরও জানায়, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের ‘ব্লকড লিস্ট’ এর কারণে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে। এ তালিকায় কয়েক হাজার লোককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যাতে করে তাদের বিদেশ সফরের সময় আটকে দেওয়া যায় বা বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত রাখা যায়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পুলিশের বিশেষ শাখা আগের তালিকা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ভিন্নমতাবলম্বী, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের বাদ দিতে শুরু করে। কাজটির বেশিরভাগই হাতে-কলমে করা হচ্ছে। ফলে কিছু ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকের নাম এখনো রয়ে গেছে। তালিকাটি দ্রুত যাচাই করে সংশোধন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের বন্ধু। দেশ ও জনগণের সেবায় পুলিশ বাহিনী দৃষ্টান্ত গড়তে চায়— উল্লেখ করে এসবি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বারবার হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির শনিবার (২৩ নভেম্বর) ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসে নুরুল কবীর বলেন, ‘দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদেশে যাওয়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আমাকে হয়রানি করে আসছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের আমার পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া, মুদ্রিত নথিতে সবকিছু লেখা থাকা সত্ত্বেও ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষা করানো, আমার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে পাসপোর্টের পৃষ্ঠার ছবি তোলা ও উড়োজাহাজ উড্ডয়নের কয়েক মিনিট আগে নথিপত্র ফেরত দেওয়ার মতো হয়রানির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যদিও দেশে ফেরার সময় কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এবার ১৮ নভেম্বর একটি মিডিয়া কনফারেন্সের জন্য বিদেশে যাচ্ছিলাম। আমি আশা করেছিলাম যে ঢাকা বিমানবন্দরে আমার হয়রানির দিনগুলো অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও শেষ হয়েছে। কিন্তু আমার ধারণা ভুল। এবার বরং দ্বিগুণ হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। দেশ ছাড়ার সময় এক ঘণ্টা এবং ২২ নভেম্বর দেশে ফেরার সময় আরো এক ঘণ্টা হেনস্তার সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাকে। আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দেশপ্রেমিক হওয়াটাকে সন্দেহের চোখে দেখে।’

এমএসআই/এসএম