‘বিডিআর বিদ্রোহে দীর্ঘ কারাবাসকারীদের মুক্তি দেওয়া হোক’
বিডিআর বিদ্রোহের কারণে যারা দীর্ঘ কারাবাস করেছেন তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের মাধ্যমে শহীদ সেনা পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনসহ প্রহসনের বিচারে অভিযুক্ত ও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সুযোগ সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল এবং জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তির দাবিতে’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর-২০০৯’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
বিজ্ঞাপন
ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর শত শত বিডিআর সদস্যদের আটক করা হয়েছিল। কিন্তু যারা আসল ষড়যন্ত্রকারী তারা বাইরে থেকে গেল। আসল ষড়যন্ত্রকারীদের না ধরে নিরীহ সৈনিকদেরকে যারা হয়ত অনেকে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে, আবার অনেকে হয়ত নির্দোষ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমি দাবি জানাবো বর্তমান সরকারের কাছে যে, সত্যিকারের ষড়যন্ত্রকারী যারা তাদেরকে যেন বিচারের আওতায় আনা হয়। এর পাশাপাশি আমি বলব, ঘটনা ঘটেছে ২০০৯ সালে। এরমধ্যে ১৫ বছর হয়ে গেছে। বিচারাধীন অবস্থায় জেলখানায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে, আর কেউ কেউ হয়ত ছাড়া পেয়েছেন সাজা মওকুফ করার পর। এখনো ৮০০ অধিক সৈনিক জেলে আটক আছে। আমার মনে হয় একজন মানুষ হিসেবে এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাটা দেখলে এর সমাধান খুব একটা কঠিন না।
তিনি বলেন, এই যে যারা ২০০৯ সাল থেকে আজকে পর্যন্ত কারাগারে আছেন তারা যদি দোষী হয়ে থাকেন তাদের শাস্তি ভোগ করা হয়ে গিয়েছে। আর যদি নির্দোষ হয়ে থাকে তাহলেতো তাদের প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তাদের সন্তানদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে, তাদের পরিবারের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। তাই আমার পরামর্শ হচ্ছে যারা দীর্ঘ কারাবাস করেছেন তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়া হোক। এবং এইজন্য আইনেরও সমর্থন আছে। আইন অনুযায়ী সরকার রাষ্ট্র যেকোনো বন্দিকে মুক্ত করে দিতে পারে শর্ত সাপেক্ষে এবং শর্তহীনভাবে।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আহ্ববান জানাই ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সৈনিক যারা আছে তাদের দিকটা যেন দেখে এবং তাদের পরিবারের কষ্টের দিকটা যেন উপলব্ধি করেন। এবং সেই অনুযায়ী মানবিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন। এতো বছর পরে তাদের প্রতি যদি একটু দয়া মায়া দেখান তাতে মানুষ অসন্তুষ্ট হবে না বরং সন্তুষ্টই হবে।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য মো. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মেজর ইমরান, কর্নেল আব্দুল হকসহ আরও অনেক বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ওএফএ/এমএ