চার দিনের সফরে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম এ এ খান। রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না, সেটির তদন্ত করছে আইসিসি। তদন্তের কাজে তার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, আগামী ২৫-২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম। তার সফরের মূল ফোকাস হবে রোহিঙ্গা নির্যাতনের তদন্ত নিয়ে। তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের কাজে অভিযুক্তদের সঙ্গে বসবেন, কথা বলবেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন। তার প্রথম কর্মযজ্ঞ কক্সবাজার থেকে শুরু হবে। কক্সবাজারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় ফিরবেন করিম। ঢাকায় অবস্থানকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির সঙ্গে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সাক্ষাতের কথা ছিল। তবে সরকারের গুরত্বপূর্ণ দুই উপদেষ্টা ওই সময়ে দেশে থাকছেন না। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই সময়ে পর্তুগাল থাকবেন। তবে আইন উপদেষ্টার অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি। ওই সময়ে প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি এ বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ সফর করবেন। পাশাপাশি প্রধান কৌঁসুলি জুলাই-আগস্ট গণহত্যা নিয়ে আইসিসিতে বাংলাদেশ অভিযোগ করতে পারে বলে ড. ইউনূসকে জানান।

জুলাই-আগস্ট গণহত্যা নিয়ে আইসিসির কৌঁসুলির সঙ্গে বিশেষ কোনো আলোচনায় বাংলাদেশ যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকার এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, এ নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন কাজ করছে। তারা হয়ত ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহে না হলেও দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। আমরা হয়ত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনে নির্ভর করছি। কারণ, তাদের আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসেছি। প্রধান কৌঁসুলির মূল ফোকাস রোহিঙ্গা নিয়ে।

রোম সনদ অনুযায়ী, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না, সেটার তদন্ত করছে আইসিসি। তদন্ত শেষে আইসিসি অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আদালতে হাজির করে।

রোম সনদের অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ বাংলাদেশ। মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশে কাজ করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক এই আদালত একটি সমঝোতা সই করেছে। তবে মিয়ানমার রোম সনদে সই করেনি।

প্রসঙ্গত, সবশেষ গত বছরের (২০২৩) জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম।

এনআই/এমএ