‘পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়মিত জাহাজ চলাচলে মালিকরা আগ্রহী’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেছেন, পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে লাইনার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো গত ১১ নভেম্বর এইচআর শিপিং লাইনের অধীনে এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম এসেছে। কনটেইনার খালাস করে ১২ নভেম্বর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে। জাহাজটি মূলত দুবাইয়ের ‘জেবল আলী’ বন্দর থেকে যাত্রা আরম্ভ করে করাচি বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আগমন করে। জাহাজটির সাধারণ রাউন্টিং হচ্ছে, দুবাইয়ের জেবল আলী-পাকিস্তানের করাচি-বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-ইন্দোনেশিয়ার বেলাওয়ান- মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং এবং ইন্ডিয়া মুন্দা হয়ে ফের দুবাইয়ের জেবল আলী।
তিনি আরও বলেন, এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং জাহাজটির প্রকৃত পরিবহন ক্ষমতা ২ হাজার ৩০০ টিইইউস কনটেইনার। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় কম সংখ্যক কনটেইনার নিয়ে জাহাজটি চট্টগ্রাম আসে। আমদানি কনটেইনার বেশি হলে ভবিষ্যতেও রুটটি নিয়মিত পরিচালনা করতে জাহাজ মালিকগণ আগ্রহী। ইতোপূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সিঙ্গাপুর এবং কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি- রপ্তানি হতো। নতুন এই রুটটি চালু হওয়ার কারণে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এতে করে ব্যয় এবং সময়ে সাশ্রয় হচ্ছে এবং উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নতুনভাবে গতিশীলতা সৃষ্টি হবে।
বিজ্ঞাপন
আজ (মঙ্গলবার) শহীদ মোহাম্মদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে আপনাদের জানাতে চাই, গত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৮২ টিইইউএস; যা বিগত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬ হাজার ৯৮৬ টিইইউএস বা ৯ দশমিক ০১৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রায় ১০ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। কোভিড অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। এই প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
জাহাজের এভারেজ ওয়েটিং টাইম কমিয়ে আনা প্রসঙ্গে রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৫ দশমিক ৫ হাজার কন্টেইনারের স্থিতি ছিল। অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮৫ শতাংশ অকুপাইড ছিল। বিগত তিন মাসে পদ্ধতিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে তা ৩৪ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে জাহাজের এভারেজ ওয়েটিং টাইম ৬ থেকে ৮ দিন হতে একদিনে নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আগমনের পর জাহাজগুলো অন অ্যারাইভাল বার্থিং পাচ্ছে।
আরও পড়ুন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম ফজলার রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এমআর/এনএফ