শ্রম ও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবি
শ্রম আইন সংশোধন করে সারা দেশের জন্য একক আইন প্রণয়নের দাবিতে সমাবেশ করেছে ঢাকা জেলা ট্যাক্সি, ট্যাক্সি কার, অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়ন।
একইসঙ্গে প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস চালক, রাইডার, ই-প্লাটফর্ম কর্মীসহ সকল শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের নিয়োগপত্র, কর্মঘণ্টা, চাকরির নিরাপত্তা, ন্যায্যমজুরি, অতিরিক্ত কাজের মজুরি, চাকরির অবসানে ক্ষতিপূরণ, উৎসব ভাতা, ছুটি, দুর্ঘটনায় আজীবন আয়ের মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারসহ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রমাধিকারসমূহ সকলের জন্য নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়েছে। সমাবেশ শেষে তারা শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে বিজয়ের প্রান্তে পৌঁছানোর অন্যতম অংশীদার প্রাইভেট গাড়ির চালক, রাইডার, ই-প্লাটফরমের কর্মীসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রমজীবী মানুষেরা তার যৌবনের শক্তি বিলিয়ে দেশের সম্পদ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। কিন্তু রাষ্ট্রের সম্পদ বৃদ্ধির সাথে সাথে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে, বিদেশে সম্পদ পাচার বাড়ছে, আর শ্রমজীবীদের অনিশ্চয়তা-নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। অথচ, এসডিজি অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতায় যে যুব শক্তি রাইড শেয়ারিং বা সার্ভিস ডেলিভারি বা ই-প্লাটফরমে যুক্ত হয়ে কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ে গাড়ি চালনা বা গৃহকর্মীর কাজ করে জীবিকা অর্জনের পথ বেছে নিয়েছে, তাদের স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষার বিষয়েও সরকারের দায়িত্বহীনতা কোনো সভ্য ও কল্যাণ রাষ্ট্রের চরিত্র হতে পারেনা।
বক্তারা আরও বলেন, আই.এল.ও গভর্নিং বডির সভায় সরকার আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শ্রম আইন-২০০৬ সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। এই সংশোধনী যেন ২০১৩ বা ২০১৮-এর মতো প্রতারণামূলক না হয়, যা শ্রম অধিকারের সুরক্ষার পরিবর্তে শ্রমিকদের অধিকার কে সংকুচিত করে। বিদ্যমান শ্রম আইনকে আই.এল.ও এর মৌলিক কনভেনশনসমূহ এবং আই.এল.ও- কনভেনশন ১০২, ১২১, ১৩১, ১৮৯ ও ১৯০-এর আলোকে এমনভাবে সংশোধন করতে হবে যাতে ব্যক্তিগত গাড়ির চালক, রাইডার, ই-প্লাটফরম কর্মীসহ সকল শ্রমিকের অধিকারের সুরক্ষা একই আইনের অধীনে নিশ্চিত করা যায়।
তারা আরও বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে শাস্তির ভয় দেখানোর চেয়ে গাড়ি চালকদের শারীরিক ও মানসিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর জোড় দেওয়া দরকার। সেজন্য সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর অপব্যবহার করে জরিমানা ব্যবসা ও দুর্নীতির সুযোগ বন্ধ করার পাশাপাশি গাড়ি চালকদের চাকরির শর্তাবলি ও সামাজিক সুরক্ষা উন্নত করার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সামাজিক মর্যাদা ও দায়িত্বশীলতার চেতনা গড়ে তোলার জন্য সমআচরণের পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মোহাম্মদ শাহাজালাল, যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান সবুজ, সহ-প্রচার সম্পাদক দুলাল হাওলাদার, ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শফিক, বাড্ডা উপকমিটির সভাপতি গোলাম রহমান প্রমুখ।
ওএফএ/এনএফ