একাডেমিক কাজ বাদ দিয়ে শিক্ষকদের দলাদলি করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সামনে একাডেমিক কার্যক্রমে গতি আনতে ভিজিল্যান্স টিম গঠন এবং নিজেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সারপ্রাইজ ভিজিট করার ঘোষণা দেন মেয়র।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে চসিকের শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, শিক্ষকরা আজকের সভায় দলাদলির যে অভিযোগটি করেছেন তা হতাশাজনক। একাডেমিক কাজ বাদ দিয়ে শিক্ষকদের দলাদলি করা উচিত নয়। যে কারো যেকোনো মতাদর্শে বিশ্বাস থাকতে পারে কিন্তু সেটা অফিস টাইমের বাইরে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে চর্চা করা উচিত।

‘আমি নিজে একটি রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করি, দল করি। কিন্তু আমি এও মনে করি যে, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকবে। আর যখন আমি একটা প্রশাসনের দায়িত্বে থাকবো সেখানে রাজনীতি টেনে আনব না। রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কোন অন্যায় করব না। এজন্য চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চসিক কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের আমি আসতে বারণ করি। অথচ আমিই সন্ধ্যা হলে দলীয় কার্যক্রমে যাই। ঠিক একইভাবে এখানে যারা এসব দলবাজি করবে তাদেরকে আমি বরদাস্ত কর।’

রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে ফাঁকি দেওয়া মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে মেয়র বলেন, ছাত্ররা যাতে ঠিকমতো পড়াশোনা করে, ঠিকমতো যাতে তারা ক্লাসে আসে, কোনো ছাত্র ক্লাস যাতে ফাঁকি না দেয়, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যে টাইমিং আছে সে টাইমিংএ যাতে সবাই একাডেমিক কার্যক্রমে থাকে তা নিশ্চিতে শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো শিক্ষক যাতে বাড়ির পাশে পোস্টিং থাকায় ক্লাসের ফাঁকে বাসায় চলে গেল এগুলো যাতে না হয়। প্রধান শিক্ষককে ইনিয়ে-বিনিয়ে বিভিন্ন ধরনের কৌশলে, বিভিন্ন প্রেসার দিয়ে চলে গেলে এই ধরনের কোনো উদাহরণ যদি থাকে, এ ধরনের ফাঁকিবাজ কোন শিক্ষক যদি থাকে বা কোনো প্রধান শিক্ষকের ওপর হুমকি দেয় কিংবা এ ধরনের কাজে লিপ্ত হয় প্লিজ লিস্ট দেবেন। সে যত বড়ই শক্তিশালী হোক না কেন শাস্তি হবে।

নৈতিক শিক্ষার ওপর জোরারোপ করে তিনি বলেন, আমরা মৌলিক শিক্ষা নৈতিক শিক্ষার ওপর কিন্তু অতটা জোর দিচ্ছি না। একজন মানুষ একজন ভালো ডাক্তার হয়তো বা হতে পারে পড়াশোনা করে। কিন্তু ভালো ডাক্তার হয়ে যদি আমি বিনামূল্যে একটা গরিব রোগীকে চিকিৎসা না করি সেক্ষেত্রে আমার ভালো ডাক্তারের আর কোনো মূল্যায়ন থাকে না। ঠিক তেমনি প্রতিটি প্রফেশনে আমি যদি মানবতাটা দেখাতে না পারি তাহলে কিন্তু সেটার কোনো দাম থাকে না। এই শিক্ষাটাই আপনারা দিতে চেষ্টা করবেন যাতে শিক্ষার্থীরা সে মানুষের মত মানুষ হতে পারে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন ও শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তারসহ চসিকের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।

এমআর/এমএ