ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা রাজধানীর মহাখালী রেল ক্রসিং এলাকায় বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের এ কর্মসূচির কারণে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মহাখালী থেকে সাত রাস্তা ও মহাখালী থেকে ফার্মগেট রাস্তায় যান চলাচল অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়।

প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এর পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। এখনো বিভিন্ন এলাকায় ওই যানজটের প্রভাব রয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী, আমতলী, বনানী, বিমানবন্দর ও সাত রাস্তা এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বিকেলে অফিস টাইম শেষ হওয়ার পর একসঙ্গে অনেক যাত্রী রাস্তায় বের হওয়ায় যানজটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকের সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ যানবাহনে যাত্রীরা বসে থেকে আর উপায় না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন। এ ছাড়া মহাখালী উড়াল সড়ক এবং নিচের সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

অন্যদিকে মহাখালীর এ যানজট ছড়িয়ে পড়ে কাকলি-বনানী হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত। মহাখালী থেকে সাত রাস্তা হয়ে মগবাজার কিংবা মৌচাক যাওয়ার রাস্তায়ও ব্যাপকভাবে যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার পরও এসব এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও এর ফলে সৃষ্ট যানজট নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীরা ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এভাবে রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে বাসে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বসে থাকা যাত্রী মো. সোহাগ বলেন, রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা মাসখানেক ধরে এমনি খুব বাজে। এক-দেড় ঘণ্টা হাতে সময় নিয়েও নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছা যাচ্ছে না। আবার এখন দেখা যাচ্ছে কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আন্দোলন করছে। আজ আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি নিয়ে আন্দোলন করুক কিন্তু আমাদের কেন তারা রাস্তায় জিম্মি করে রেখে রাখছে।

জাহাঙ্গির গেটে আটকে পড়া যাত্রী আজিজুল হক বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমার গাজীপুর যাওয়ার কথা। সকাল থেকে আন্দোলন হচ্ছে দেখে বিকেলের দিকে বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু এখনো গাড়ির চাকা ঘুরছে না। এভাবে চলতে থাকলে তো এ শহর অচল হয়ে পড়বে।

মহাখালী ও আশপাশের এলাকার যানজট পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জুনায়েদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকেই মহাখালী ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। তবে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে চলে যান। কিন্তু রাস্তায় এখনো গাড়ির চাপ রয়েছে। আমরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

এমএসি/এসএসএইচ