স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট নীতিমালা নিয়ে গণশুনানির আহ্বান
স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট নীতিমালা নিয়ে গ্রাহকদের মতামত জানতে গণশুনানি করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারীদের জন্য প্রণীত খসড়া রেগুলেটরি ও লাইসেন্সিং গাইডলাইনস’ শিরোনামে নতুন নির্দেশিকার ব্যাপারে এই আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেটের ব্যাপারে গ্রাহকের সামর্থ্য এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে অধিকতর মতামত নেওয়ার জন্য বিটিআরসিকে একটি গণশুনানি আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন, স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাসহ নতুন প্রযুক্তিগত সেবাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে সেটি হতে হবে নাগরিকদের কল্যাণে এবং গ্রাহকদের সামর্থ্য ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে, দেশে এখনো ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ইন্টারনেট ব্যবহারের বাইরে রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে একটি বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে। এই বৈষম্য নিরসন করতে বাংলাদেশে প্রথম স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
বিবৃতিতে তিনি বেশকিছু প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে-
১. সামাজিক অর্থনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক বিশেষ করে গ্রাহকের সামর্থ্য বিবেচনা করে স্যাটেলাইটভিত্তিক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এবং প্রতিটি সংযোগ থেকে ইন্টারনেট শেয়ারিং অর্থাৎ গ্রাহক থেকে গ্রাহক কতজন হবে বা কি পরিমাণ হবে তা সুস্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে।
২. বাংলাদেশে এখনো নাগরিকের ডাটা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন হয়নি। তাই নাগরিকের ডাটা সুরক্ষায় কি ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে তা জনস্বার্থে জাতীয়ভাবে কমিশন ও স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট কোম্পানিকে ঘোষণা করতে হবে।
৩. এই নীতিমালায় চাহিবা মাত্র গ্রাহকের তথ্যে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং কমিশনকে প্রবেশ অধিকার চাওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবেই সংবিধান পরিপন্থি বলে আমরা মনে করছি। তবে রাষ্ট্র ও প্রচলিত আদালত এবং আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে কেবলমাত্র আদালতের নির্দেশিত ব্যক্তির ডাটায় প্রবেশ করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা বিটিআরসি অন্যথায় নয়।
৪. ডিটিএইচ সেবা সম্পূর্ণ বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে বর্তমানে ডিটিএইচ সেবা সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।
৫. প্রস্তাবিত নীতিমালা সম্পর্কে একটি গণশুনানির অনুষ্ঠান আয়োজন আবশ্যক। বাংলাদেশে এলএনজি আমদানির আগে নীতিমালা প্রণয়ন ও মূল্য নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন একটি গণশুনানির অনুষ্ঠিত করেছিল।
একইসঙ্গে এর ফলে ইন্টারনেট খাতের দেশীয় উদ্যোক্তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টিও নীতিমালা প্রণয়নে খেয়াল রাখা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ‘বাংলাদেশে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারীদের জন্য প্রণীত খসড়া রেগুলেটরি ও লাইসেন্সিং গাইডলাইনস’ শিরোনামে নতুন নির্দেশিকা তৈরি করেছে। যার উপর মতামত দেওয়ার জন্য এরইমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন ওই নির্দেশিকায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে।
আরএইচটি/জেডএস