যুবলীগ নেতার স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ: দুদকের চার্জশিট অনুমোদন
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সাবেক যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের স্ত্রী আয়েশা আক্তার সুমা ওরফে সোমার বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ১১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন বলে জানা গেছে।
সাড়ে ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর জাকিরের স্ত্রী সোমার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তবে চার্জশিট পর্যায় এসে ৬১ লাখ টাকার সম্পদ বেশি পাওয়া গেছে দুদকের তদন্তে।
সোমার নামে রাজধানীর পল্টনে ২৯৩ শতাংশ জমিতে সাত তলা বাড়ি এবং তার আয়কর নথি পর্যালোচনায় আরো তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। বাস্তবে এসব সম্পদের মূল্য বহুগুণ বেশি।
এর আগে সোমার স্বামী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরে পাঁচ কোটি ৮৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ চার্জশিট দেয় দুদক।
জাকিরের তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআর হিসাবে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮ হাজার টাকা জমা আছে। তদন্তে যার পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীর তিন স্থানে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে সম্পদের মধ্যে। যদিও গত করবর্ষে (২০১৮-১৯) তিনি তার আয়কর নথিতে ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। সব মিলিয়ে সর্বমোট পাঁচ কোটি ৮৫ লাখ টাকা অর্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।
জাকির হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বাস্তুহারা জাকিরের পরিবার বরিশাল ছেড়ে ঢাকায় আসে। ঢাকায় তাদের ঠিকানা হয় ডেমরার চনপাড়া বস্তি। ওই বস্তিতে বেড়ে ওঠেন জাকির। ১৯৯১ সালের দিকে জাকির কাকরাইল এলাকায় পায়েল নামে একটি রেস্টুরেন্টে দৈনিক ৩০ টাকা বেতনে গ্লাস বয়ের কাজ নেন। এক বছর পর গ্লাস বয়ের কাজ ছেড়ে মাসে দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের তৃতীয় তলায় ‘টনি ফিল্ম’ প্রতিষ্ঠানের পিয়ন হিসেবে। ওই সময় আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাকর্মীদের নিয়মিত আড্ডা ছিল কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের নিচে ‘হোটেল ম্যারাডোনা’কে কেন্দ্র করে। সেখানেই ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সঙ্গে পরিচয় হয় জাকিরের। এরপর তারা ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। সম্রাট যাদের দিয়ে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন তাদের মধ্যে জাকির অন্যতম।
আরএম/এসআরএস