আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার করা হবে কি-না, তা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, আমরা যতটুকু দেখেছি ইভিএম মেশিনগুলো দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্র। এমনকি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগুলো খুব ব্যয়বহুলও। তাই এ নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিতে চাই।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দুর্ভাগ্যবশত ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র। এমনকি আমাদের যে মেশিনগুলো ছিল, সেগুলোও হয়ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকার্যকর হয়ে গেছে। এগুলো খুবই ব্যয়বহুল। এগুলো নিয়ে আমরা অসংখ্যবার কথা বলেছি অনেক বিবৃতি দিয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা এটি যদি ব্যবহার করতে হয়, একটা রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই করতে হবে। ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদদেরই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে হবে।

কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, এখন পর্যন্ত ২১টি সভা করেছে সংস্কার কমিশন। বিধিবিধান, আইন-কানুন নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যার ভিত্তিতে আমরা সুপারিশ করেছি। ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তথ্য পাচ্ছি। ৩৬৪টি ই-মেইল এবং মেসেঞ্জারেও তথ্য পেয়েছি।

এছাড়া বিভিন্ন গ্রুপ অনানুষ্ঠানিকভাবে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলেও জানান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব অ্যাজেন্ডা নেই। আমরা কোনো দলের পক্ষে কাজ করতে আসিনি। আমরা বদ্ধপরিকর, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের রক্তের সঙ্গে যাতে বেইমানি না হয়।

বিগত নির্বাচনগুলোতে গোয়েন্দা সংস্থার হয়রানি বেআইনি এবং জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা উচিত বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান। তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অতীতে অনেক অন্যায় অপকর্ম হয়েছে। এগুলো যাতে বন্ধ হয় এবং একটি সুন্দর নির্বাচন ব্যবস্থা যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, একইসঙ্গে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা যেন শক্ত একটি ভিতের উপর দাঁড় করানো যায়, সেগুলো আমরা চেষ্টা করব।

সেমিনারে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদসহ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অন্যান্য সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/জেডএস