সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে দেশে অরাজকতা তৈরি হবে
অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম ব্যর্থতা হলো বিপ্লবে আহতদের সুচিকিৎসা এবং পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে না পারা। এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করলে দেশে অরাজকতা তৈরি হবে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে প্রফেসর কে আলী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ : অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০দিন-সফলতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন বক্তারা।
বিজ্ঞাপন
এসময় উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা করে তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করেও সরকার পতন ঘটাতে পারতে না যদি সেনাবাহিনী সহায়তা না করতে। বিগত ১৫ বছরে দুর্নীতির শেকড় মাটির অনেক গভীরে চলে গেছে। মাত্র ১০০ দিনে সব সমস্যার সমাধান করা সরকারের পক্ষে কঠিন। ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশে যত সরকার ক্ষমতায় এসেছে সবাই গণতন্ত্রের নামে ভণ্ডামি করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিপ্লবের নিরাপত্তা, সরকারের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। না হলে বিপ্লব ব্যর্থ হতে পারে। যেসব সরকারি কর্মকর্তা দিনের ভোটকে রাতে করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনে এই সংস্কার জরুরি।
আরও পড়ুন
সাবেক আইজিপি ও সচিব নুরুল হুদা বলেন, বিভাজন দিয়ে চলে না, দেশটাকে ইউনাইটেড করতে হবে। জাতিকে ইউনাইটেড করে না নিতে পারলে মুশকিল আছে। কে কোন চেতনার আলাদা করা চলবে না। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। এটা পলিটিশিয়ানরা করবে।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে কিন্তু বেশি লোক মারা যায়নি। ১৯৭১ সালে এত লোক মারা গেল তারপরেও অনেকের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট জব্দ করেছি সার্ভিসে থাকতে।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নুরুল হুদা বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি আপনার কনফিডেন্স নেই, শিক্ষকের প্রতি কনফিডেন্স নেই। দেশটা চলবে কাকে দিয়ে? বিরাট এক অবক্ষয় হয়েছে। আমাদের এখন ভালো লোকের সন্ধানে থাকতে হবে। পড়ালেখা একটু কম জানলেও চলবে। খুব বেশি পড়ালেখা জানার লোকরা দেশকে খুব ভালোভাবে চালায়নি। খুব বেশি শিক্ষিত লোকরা তাদের মগজ বা ইমান বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ সরকারকে মনে হয়েছে দাদা-নাতির সরকার। কাজের লোক কম। জনগণ যদি সরকারের পাশে থাকে তাহলে এই সরকার সফল হবেই।
সভাপতির বক্তব্য প্রফেসর ড. শেখ আকরাম আলী বলেন, বর্তমান সরকার সার্থক, তবে এটাকে জাতীয় বিপ্লবী সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করলে সরকারের ভালো হতো, দেশের ভালো হতো। ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ৫ আগস্টের স্বাধীনতাকে মনে রাখতে হবে। আমরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চাই। প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বলব, বড় ভাই সুলভ আচরণ ত্যাগ করতে হবে।
এমএইচএন/এসএসএইচ