রাজধানীর খিলক্ষেত ও জোয়ার সাহারা এলাকায় বিপ্লবী ছাত্র-জনতার উদ্যোগে সড়কে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। স্কুলকলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বৃহস্পতিবার  দুপুর ১২টার দিকে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এ সময় তারা চালক ও যাত্রীদের সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলি করেন ছাত্ররা। সেই সঙ্গে জোয়ার সাহারায় বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

সড়কে চালকদের সঙ্গে ও বিআরটিএ’র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ছাত্ররা দেখতে পান, ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও সড়ক ব্যবহারের বহু নিয়ম গাড়িচালকেরা ভুলে গেছেন। কোন কোন জায়গায় ওভারটেকিং করা যাবে না বা গাড়ি বের করার আগে গাড়ির কোনো কোনো বিষয় পরীক্ষা করতে হবে তা তাদের অনেকে ঠিকমতো বলতে পারেননি। 

নিকুঞ্জ এলাকায় পেশাদার গাড়িচালকদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু এ ধরনের কেন্দ্র আরো বাড়ানো উচিত। প্রশিক্ষণকেন্দ্রে বিআরটিএ এর অনলাইনসেবাদান সংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শন বা ভিডিওচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

দালালদের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার ক্ষেত্রে জোয়ারসাহারায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী হাকিম ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ জানানোর নোটিশ টানিয়ে দেওয়া আছে-কিন্তু অভিযোগ জমা পড়ে কম।

নতুন সরকার আসার পর জোয়ারসাহারা কেন্দ্রে তদারকি ব্যবস্থা আরো জোরদার হয়েছে। কর্মকর্তারা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গ্রাহক সেবা দিতে ব্যস্ত থাকেন। কারণ এই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিআরটিএ‘র ১৮টি সেবা অনলাইনে পাওয়ার যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে তার সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত নন সকল গ্রাহকেরা। এজন্য বিআরটিএ‘র প্রচার-প্রচারণা আরো বাড়াতে হবে। তাতে করে গ্রাহকদের দালালদের কাছে যাবার হার কমবে।

সড়কে সচেতনতামুলক কর্মসূচি চলাকালে বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসান জাবের বলেন, বিমানবন্দর সড়কে যেখানে-সেখানে চালকরা বাস দাঁড় করিয়ে রাখেন, গতিসীমা মানেন না। এসব কারণে সড়ক বিশৃঙ্খল- পাশের উড়ালসেতুতেও যানজট সৃষ্টি হয়। এ কারণে বিআরটিএ, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত অভিযান না চালানোর বিষয়টি দুঃখজনক। সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ৩২টি সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। তাছাড়া, বিআরটিএ জোয়ার সাহারা কেন্দ্রে ভিন্ন দৃশ্য আমরা দেখেছি, যেখানে আগের চেয়ে গ্রাহক সেবা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তারা তৎপর- এই ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেই কামনা আমাদের থাকবে। সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীরা এর আগে ২০১৮ সালেও আন্দোলন করেছে। তারা গত ৫ আগস্টের পর থেকে অনেকদিন সড়কে দায়িত্ব পালন করেছে। এখনো বহু স্থানে তারা দায়িত্ব পালন করছে। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি সংস্থাগুলোকে সুসমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনাসহ সচেতনতামূলক কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নিরাপদ সড়কের জন্য দক্ষ চালক তৈরি করতে বিআরটিএর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আরও বাড়াতে হবে। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার কেন্দ্রে গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে জোয়ার সাহারা কেন্দ্রে বিশ্রামাগার নির্মাণসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কারণ প্রতিদিন পরীক্ষা দিতে আসা গ্রাহকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ভোগান্তিতে পড়েন।

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন, রেজওয়ান গাজী মহারাজ, মাহমুদুল হাসান, নেওয়াজ শরীফ, সজীব প্রমুখ। কর্মসূচি চলাকালে ছাত্ররা বিআরটিএ চত্বরে ‘সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় শিক্ষার্থীরা’ শীর্ষক প্রচারণা চিত্র উদ্বোধন করেন।

এমজে