বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ
‘বিতর্কিত উপদেষ্টা নিয়োগ শহীদের রক্তের অবমাননা’
ছাত্র-জনতার অংশীদারত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগ এবং এতে ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দিয়ে শহীদের রক্তের অবমাননা হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সন্ধ্যায় সেখান থেকে একটি মিছিল বের হয়ে ভিসি চত্বরে গিয়ে সমাপ্ত হয়। বিক্ষোভে বিতর্কিত ব্যক্তিদের উপদেষ্টা পদ থেকে অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের সবচেয়ে বড় আইরনি হলো তিন মাস পরেও হাসিনার বিচার চাইতে হয়। ধানমন্ডি ৩২-কে আদর্শ মনে করা লোকদের উপদেষ্টা দেওয়া হয়। আমরা খুনি হাসিনাকে উৎখাত করেছি তার লিগ্যাসি রক্ষা করার জন্য না। আমাদের প্রতিবাদের মুখে গণভবন থেকে মুজিবের ছবি সরানো হয়েছে। যাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের ন্যূনতম সম্পর্ক রয়েছে তাদের সরকারে দেখতে চাই না।
আরও পড়ুন
সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, যারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে ধারণ করে না, ধানমন্ডি ৩২-কে কাবা মনে করে তাদের আমরা লাল কার্ড দেখাই। এমন কাউকে আমরা উপদেষ্টা প্যানেলে চাই না। উপদেষ্টা নিয়োগে আঞ্চলিকতাকে ইস্যু করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই, অথচ আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ উত্তরবঙ্গের। এই সরকারের যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ফ্যাসিস্টের দোসর, সফট আওয়ামী লীগ ও সফট শাহবাগীদের উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এর অর্থ হলো আহত ও শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা। গতকাল (রোববার) যে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা ছাত্র-জনতাকে জানানো হয়নি। এদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। উপদেষ্টাদের কাজের স্পষ্টতা থাকতে হবে, নিয়োগ প্রক্রিয়া, দুর্নীতি দমন সবকিছু স্পষ্ট করতে হবে। আপনাদের প্রতি সপ্তাহের কাজের বিবরণী তুলে ধরতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উপদেষ্টাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই-আগস্টে ফেসবুকে দুই-একটা পোস্ট দিয়েই উপদেষ্টা হয়ে যাচ্ছেন। ভারতের দালালি করা ব্যক্তিরাও ডাক পাচ্ছেন বঙ্গভবনে, যেটি অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানি। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হলো সেটি স্পষ্ট করার আহ্বানও জানান তারা।
বিক্ষোভে উত্তরবঙ্গের কোনো জেলার কেউ উপদেষ্টা নিয়োগ না পাওয়ার সমালোচনাও করেন আন্দোলনকারীরা। এমন নিয়োগ ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
কেএইচ/এসএসএইচ