বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় পুলিশ স্টাফ কলেজে অর্থপাচার বিরোধী ও কাউন্টার-থ্রেট অর্থায়ন বিরোধী (এএমএল/সিটিএফ) প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

রোববার (১০ নভেম্বর) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ১১টি সংস্থার ৬০ জন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন, যা আনুষ্ঠানিক সেমিনার, অনলাইন প্রশিক্ষণ এবং ব্যবহারিক তদন্তমূলক অনুশীলনসহ এক বছরের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সূচনা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের নেতৃত্বে এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাসবিরোধী ব্যুরোর অর্থায়নে এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের আর্থিক ও সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তদন্ত ও কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

বছরব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আর্থিক তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেসিং। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের প্রমাণ সংগ্রহ এবং মামলার উপস্থাপনে আন্তর্জাতিকমানের দক্ষতা অর্জনের সুযোগ মিলবে।

এই প্রোগ্রামটি আর্থিক ও সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করে, যা নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং আরও সুরক্ষিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রচারে সহায়তা করবে।

চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (এ.আই) মেগান বোল্ডিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ উভয়ই সীমান্ত পেরিয়ে কাজ করা আন্তঃদেশীয় অপরাধী নেটওয়ার্কের অভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা এই নেটওয়ার্কগুলোকে দুর্বল করতে এবং আমাদের নাগরিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হব।

চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বার বক্তব্যে এই বহুমুখী হুমকির—যার মধ্যে আর্থিক অপরাধ, মানবপাচার এবং সন্ত্রাসবাদ অন্তর্ভুক্ত—মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

মার্কিন দূতাবাস জানায়, ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অপরাধস্থল ব্যবস্থাপনা, সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধ, নেতৃত্ব এবং মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশের ২৫ হাজার জনের বেশি পুলিশ ও ২৫০ জন অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তার প্রশিক্ষণে সহায়তা করেছে। এর মধ্যে ভার্চুয়াল কারেন্সি তদন্ত এবং সামাজিক মাধ্যম কৌশলের মতো বিশেষ বিষয় নিয়ে সেশনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণের সুযোগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব চিফস অব পুলিশ কনফারেন্স এবং উইমেনস লিডারশিপ ইনস্টিটিউট।

মার্কিন দূতাবাস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশে পেশাগত উন্নয়ন এবং উন্নত নিরাপত্তা চর্চা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এনআই/জেডএস