যাত্রী পরিবহনের সংকট মেটাতে নতুন ডিজাইন করে ‘একক যাত্রা’র কার্ড এনেছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সোমবার (৪ নভেম্বর) থেকে কার্ডগুলো লাইনে দেওয়া হয়েছে এবং যাত্রীরা ব্যবহার করছেন। নতুন কার্ডের ডিজাইন নিয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন যাত্রীরা।

নতুন ডিজাইনের কার্ড ছাপিয়ে আনার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমটিসিএলের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) নাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এই মাসে ২০ হাজার কার্ড এনেছি। আগামী মাসে আরও ২০ হাজার কার্ড আসবে। এভাবে ফেজ বাই ফেজ কার্ড আনা হবে।

ডিএমটিসিএলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছে, নতুন কার্ড নিয়ে অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল। নতুন কার্ডগুলো ইতোমধ্যে দেশে আসতে শুরু করেছে। জাপান থেকে এয়ার মেইলে আনা হচ্ছে কার্ডগুলো।

সূত্রটি আরও জানায়, শুধু কার্ডগুলো এনেই সঙ্গে সঙ্গে লাইনে ছাড়া সুযোগ নেই। এগুলোকে প্রথমে আমাদের সফটওয়ারে রি-ইনিশিয়ালাইজড (পুনরায় চালু করা) করা হচ্ছে। তারপর স্টেশনে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো সোমবার থেকে ব্যবহার করতে পারছেন যাত্রীরা।

বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। তারা ভালো-মন্দের পক্ষে নানা মত দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কমিউনিটি গ্রুপগুলোতে। আজিজ রোমান নামের একজন লিখেছেন, সহজ জিনিস কিউআর কোড রেখে এরকম উদ্ভট পরিকল্পনা কেন করে?

আবার আবিদুর রহমান নামের একজন লিখেছেন, নতুন ডিজাইন মানে নতুন করে কালেকশনে রাখার জিনিস, আবার চুরি হবে। সোহেল মোস্তফা নামের একজন লিখেছেন, ছোট টোকেন বা কাগজে প্রিন্ট হলে ভালো, লাইক ইন্ডিয়া।

সৈয়দ রিয়াদ নামের একজন লিখেছেন, সুন্দর ডিজাইন। এখন এমআরটি পাস আর একক যাত্রার টিকিট সহজেই আলাদাভাবে চেনা যাবে।

নতুন কার্ড সম্পর্কে মেট্রোরেল প্যাসেঞ্জার্স কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডমিন ও নিয়মিত যাত্রী নাঈম ইসলাম সোহাগ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নতুন কার্ডের ডিজাইনে ভিন্নতা এসেছে। যাত্রীরা এটি পছন্দ করছেন। তবে কার্ডটি আগের মতোই, এটিতে ফিজিক্যাল কোনো পরিবর্তন আসেনি।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, সবগুলো স্টেশন মিলিয়ে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৪১টি একক যাত্রার টিকিট দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে একক যাত্রার যাত্রীরা বহির্গমন গেটে বসানো নির্ধারিত মেশিনে জমা দেননি প্রায় ২ লাখ কার্ড। নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ছয় হাজার ৮৮১টি কার্ড। দেড় হাজার কার্ড অন্যভাবে হারিয়েছে। এতে স্টেশনগুলোতে টিকিট সংকট দেখা দিয়েছে।

তখন যাত্রীদের এসব কার্ড ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, একক যাত্রার টিকিট মেট্রোরেল স্টেশনের বাইরে নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব কার্ড বাইরে নিয়ে অন্য কোনো কাজে ব্যবহারও করতে পারবেন না। তাই অনুরোধ রইল এসব কার্ড নিকটবর্তী স্টেশনে এসে ফেরত দেবেন। এতে রাষ্ট্র আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচবে।

মেট্রোরেলের স্টেশনের কর্মীরা জানিয়েছেন, বহির্গমন গেটে টিকিট জমা পড়ার পর সেই টিকিট নিয়ে আবার ভেন্ডিং মেশিনে প্রবেশ করাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হয় বহির্গমন গেটে পর্যাপ্ত টিকিট জমা হওয়া পর্যন্ত। কারণ বারবার ওই গেট খুলে টিকিট বের করা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। সবাই এই গেট খুলে টিকিট বের করতে পারে না। কর্মীরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় কখনো গেট থেকে টিকিট বের করতে দেরি হয়। এক্ষেত্রে আবার টিকিট কাটার ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে যাত্রীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এমএইচএন/এসএসএইচ