রাঙামাটি ভ্রমণে বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের পর শুক্রবার (০১ নভেম্বর) থেকে আবারও পর্যটকরা ভ্রমণ করতে শুরু করেছেন। সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন হওয়ায় এদিন সকাল থেকে রাঙামাটিতে আশানুরূপ পর্যটকের দেখা মিলেছে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, পর্যটক আসতে শুরু করলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।

গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ ছিল। শুক্রবার থেকে জেলার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণ করতে শুরু করেছেন।

এদিন সকাল থেকেই রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। দলে দলে পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। ঝুলন্ত সেতুর পাটাতনে হাঁটা-চলার পাশাপাশি অনেকেই কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করেছেন। রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মোহিত পর্যটকরা জানান, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। এদিকে পর্যটক আসতে শুরু করায় খুশি ব্যবসায়ীরাও।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবু নোমান বলেন, আমরা জানতাম যে এতদিন রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গতকাল জানতে পেরেছি যে আজ (শুক্রবার) থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। তাই সকাল-সকালই রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম। এখানে এসে ভালো লাগছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক সুধির দাশ বর্মন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ থেকে রাঙামাটিতে আবারো পর্যটকরা বেড়াতে আসতে পারবেন। এটি আমাদের জন্য একটি সুসংবাদ। আমরা ৪০ জনের একটি গ্রুপ বাস নিয়ে এসেছি। রাঙামাটির রূপ দেখে আমরা সত্যিই মুগ্ধ। সবারই বেড়াতে আসা উচিত।

পর্যটন নৌযান ঘাটের ম্যানেজার মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক পর্যটক আগমন বন্ধ থাকায় আমরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আজ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় ট্যুরিস্ট বোট মালিক-শ্রমিকরা সবাই খুশি। আশা করছি এই মৌসুমে একটা ভালো ব্যবসা হবে এবং আমরা আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।

এদিকে পর্যটক বরণে প্রস্তুত আছে শহরের হোটেল-মোটেলগুলো। হোটেল স্কয়ার পার্কের ব্যবস্থাপক আবুল হাসান রায়হান বলেন, নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কাটিয়ে আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় আছি। আজ বন্ধের দিন হওয়ায় বেশ কিছু পর্যটক এসেছেন। আশা করছি সামনের শীতের মৌসুমে বেশ ভালো রকমের পর্যটক সমাগম হবে রাঙামাটিতে।

বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের প্রথম দিনেই ভালো পর্যটক আসছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিন হিসেবে আজ বেশ ভালোই পর্যটক সমাগম হয়েছে। সবাই ঝুলন্ত ব্রিজে যাচ্ছেন। সেখানে বোট নিয়েও পর্যটকরা কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করছেন। পর্যটক আগমনের হারটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, গত ২৪ দিনে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের ৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মিশু মল্লিক/এফআরএস