ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটি আবেদন এবং ৭০০ টাকাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র দুই নার্সের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা হলেন- ৭০১ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স মামুন ও অফিসে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু জাফর রাকিব।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে এই নিয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক শাহানা আবেদীন ও হাসপাতালের পরিচালকের রুমে কয়েক দফা মিটিং হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রশাসনিক ব্লকে নার্সদের অফিসকক্ষে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নার্স মামুনকে হাসপাতালের কলেজগেট মসজিদের সামনে ডেকে নিয়ে চড়থাপ্পড় মারেন আবু জাফর রাকিব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিনিয়র স্টাফ নার্স অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে নার্সিং অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। রিক্রিয়েশন লিভ, ম্যাটানিটি লিভ কোনো ধরনের ছুটির বিষয় নিয়ে হাসপাতালের অফিসে গেলে টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না। আজকের ঘটনার বিষয়— নির্দিষ্ট সময়ে চিত্ত বিনোদনের ছুটির আবেদনের জন্য প্রত্যেক নার্সের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে এবং যারা নির্দিষ্ট সময় আবেদন করতে পারেনি তাদের জন্য ৭০০ টাকা নির্ধারণ করেছে তারা। এই বিষয় নিয়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স মামুন ও আবু জাফর রাকিবের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাকে মসজিদের সামনে নিয়ে চড় মারেন অফিসের সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু জাফর রাকিব।

তারা আরও বলেন, এখানে একটি সিন্ডিকেট নার্সদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নিচ্ছে। এটা হাসপাতালে ওপেন সিক্রেট। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এই বিষয়ে আজ কয়েক দফা মিটিং হয়ে বিষয়টি মোটামুটি সমাধান হয়েছে।

ভুক্তভোগী মামুন জানান, চিত্ত বিনোদনের জন্য একটি ছুটি পাই সেজন্য দুই বছর পর পর আবেদন করতে হয়। আমি ছুটিতে থাকায় এবং গ্রুপে বিষয়টি ফলো না করায় আবেদনের সময় চলে গেছে। আমি আবার আবেদন করার জন্য অফিসের সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু জাফর রাকিবের কাছে যাই। এই আবেদন করার টাকা নিয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন মসজিদের সামনে যাও। আমি সেখানে গেলে আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক শাহানা আবেদীন ও হাসপাতালের পরিচালকের রুমে মিটিং করে আমরা বিষয়টি মোটামুটি সমাধান করেছি। তবে শনিবারে বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান হবে বলে আশা করছি।

অভিযুক্ত নার্স আবু জাফর রাকিব বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছে। তবে এই বিষয়ে আমি সিনিয়র স্টাফ নার্স মামুনের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি তাকে বেশি জোরে না হালকা করেই চড় মেরেছিলাম। এখন আমি পারিবারিক কাজের জন্য ছুটি নিয়ে আব্দুল্লাহপুর যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে ঢামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক শাহানা আবেদিন বলেন, সিনিয়র দুই স্টাফ নার্স মামুন ও রাকিবের মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল। প্রথমে আমার রুমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয় এবং পরিচালককে বিষয়টি অবগত করা হয়। সেখানে আমরা আরেক দফা মিটিং করি। পরে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আগামী শনিবার বিষয়টি স্থায়ীভাবে বসে সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালককে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এসএএ/এমজে