শাপলা চত্বরের গণহত্যা নিয়ে ডকুমেন্টশন ম্যাগাজিন শাপলানামা’র সম্পাদক খুবাইব মাহমুদ অভিযোগ করেছেন তাকে কালো গ্লাস লাগানো একটি গাড়িতে তুলে পল্টন থানায় নেওয়া হয় মঙ্গলবার রাতে। সেখানে জঙ্গি সম্পৃক্ততাসহ বিতর্কিত সংগঠন হিযবুত তাহরিরের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের অপচেষ্টা চালানো হয়।   

গতকাল বিকেলে বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেইটে সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, ‘নিজের ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে আমি এই ইসলামিক বইমেলাতে আসি। এবং এখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটাই। এরপর ইসলামিক বইমেলা থেকে রাত সোয়া আটটার দিকে (এক দুই মিনিট কমবেশি হতে পারে।) নিজ ঠিকানা চাষাড়া নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার জন্য মেয়র মোহাম্মাদ হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে আমি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আর ঠিক সেই সময়ে সাদা পোশাকে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি রাস্তার মধ্যেই বেশ খানিকটা সময় আমার সাথে রহস্যপূর্ণ আচরণ করার পর কোনো পূর্ব অভিযোগ ছাড়াই- ‘জানালায় কালো গ্লাস লাগানো এমন গাড়িতে’ করে আমাকে পল্টন থানায় তুলে নিয়ে যায়। এরপর ঘণ্টাব্যাপী সেখানে অপরিচিত অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞসাবাদে তারা আমার বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততাসহ বিতর্কিত সংগঠন হিযবুত তাহরিরের সাথে আমার যোগসূত্র প্রমাণে আপ্রাণ অপচেষ্টা চালাতে থাকে। কিন্তু শত চেষ্টা করার পরও তারা ব্যর্থ হয় এবং রাত সাড়ে ১২টার পর আমাকে মুচলেকা দিতে বাধ্য করে পল্টন থানা থেকে ছেড়ে দেয়।

খুবাইব মাহমুদের এ সংবাদ সম্মেলনের পর রাতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য পরিষ্কার করে ডিএমপি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানায়— খুবাইব মাহমুদকে গোয়েন্দা তথ্যের জন্য তুলে নেওয়া হলেও তাকে হয়রানি বা গুম চেষ্টার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। 

মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় দিকে গুলিস্তান এলাকা থেকে খুবাইব মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিটিটিসির একটি দল পল্টন থানায় নিয়ে আসে। তার বিস্তারিত পরিচয় এবং গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে তার পরিবারে সংবাদ জানানো হলে রাত আনুমানিক ১২টায় সময় তার মামা মারগুবুসসুন্নাহ ও তার শিক্ষক মো. ইমদাদ হোসেন থানায় আসেন। পরে মুচলেকা গ্রহণপূর্বক খুবাইব মাহমুদকে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুবাইব মাহমুদ প্রচার করেন যে, তাকে হয়রানিমূলক জিজ্ঞাসাবাদ ও গুমের চেষ্টা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে গোয়েন্দা তথ্য যাচাই ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় আনা হয় এবং প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো রকম হয়রানি বা গুম চেষ্টার অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঘটনার প্রকৃত কারণ না জেনে এ নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানারকম মন্তব্য করছেন এবং অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। 

এনটি/এনএফ