গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অধিকারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্যের অবকাশ নেই। নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে নাগরিকদের মধ্যে অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহেরও গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রয়োজন।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

এসময় সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রূপান্তরের জন্য গণঅভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা যাবে না। বিভাজন ও অনৈক্য দেখা দিলে তাতে কেবল পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিই লাভবান হবে। কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। জোর করে কোনো অ্যাজেন্ডা ঢুকাতে গেলে তাতে অন্তর্বর্তী সরকার অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের মধ্যে পড়বে। অনেকের মধ্যে পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের ছায়া দেখা যাচ্ছে। সরকারকে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে তাদের পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানাচ্ছি। 

সাংবাদিক ও লেখক আবু সাঈদ খান বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আমাদের গৌরবজনক উত্তরাধিকার ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অর্জনসমূহ সাথে নিয়েই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। হঠাৎ করে আমাদের যাত্রা শুরু হয়নি। অতীত মুছে ফেলার যে কোনো তৎপরতা আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

সভার সভাপতি শেখ আবদুন নূর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এই সুযোগ নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।

লেখক, বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, আমাদের চিন্তা মননে স্বৈরাচার বাসা বেধেছে। সবার মধ্যে কেমন করে যেন এক এক জন ছোট ছোট ফ্যাসিস্ট হাসিনা জায়গা করে নিয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য এই ফ্যাসিবাদী চিন্তা মনোভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য  ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আওয়ামী লীগ তার ১৬ বছরের দুঃশাসনে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি ধ্বংস করে গেছে। ক্ষমতাকে তারা লুটপাটের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছে।এখন গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে রাষ্ট্র ও সমাজের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য নারীনেত্রী বহ্নিশিখা জামালী বলেন, আমাদের সমাজে নারীরা শ্রেণি ও পুরুষতান্ত্রিক দ্বিবিধ শোষণের শিকার। নারী মুক্তির প্রশ্ন এখনও সংস্কারের আলোচনায় বড় ভাবে নেই। নারীবান্ধব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে নারীর অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে।

সাবেক সংসদ সদস্য তাসমিন রানা বলেন, রাষ্ট্র প্রশাসনের ক্ষেত্রে আমরা এখনও ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার বহন করছি। স্বাধীন দেশের উপযোগী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সংস্কার সাধন করতে হবে।

এএসএস/এমএসএ