রাজধানীতে ১৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার জাল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফিসহ এসব জিনিস তৈরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এছাড়া জাল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি তৈরির প্রায় ৪০ লাখ টাকার সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মোছা. হাজেরা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম জীবন, মো. আলিম শেখ ও মো. মাসুদ রানা।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জাল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি তৈরি করে আসছিল চক্রটি। তৈরি করা এসব জিনিসপত্র বিভিন্ন আর্থিক, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও স্ট্যাম্প ভেন্ডারে বিক্রি করতো তারা।’

তালেবুর রহমান জানান, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার ফকিরাপুলের একটি প্রিন্টিং প্রেসে অভিযান চালিয়ে চক্রটির সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। সেখান থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আলিম শেখের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বিজয় সরণি, মিরপুর, সাভারের কয়েকটি প্রিন্টিং প্রেসে অভিযান চালায় ডিবি। এতে প্রায় ১৫ কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি-সহ চক্রের মূলহোতা মোছা. হাজেরা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম জীবন ও মো. মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজতে থাকা ১০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ টাকা মূল্যের ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০টি স্ট্যাম্প আমরা জব্দ করেছি। যার মূল্য প্রায় ১৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এছাড়া জাল স্ট্যাম্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের সরঞ্জাম আমরা উদ্ধার করেছি।’

তালেবুর রহমান আরও জানান, ‘চক্রটি নানা কৌশলে স্ট্যাম্পগুলো তৈরি করতো। প্রথমে কাগজ সংগ্রহ করে, এরপর সেগুলো বিশেষ ক্যামিলের মাধ্যমে স্টাম্প ও কোর্ট ফি’র ছাপানোর কাজটি করে।’

ডিএমপির মিডিয়া শাখার ডিসি বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চক্রের প্রধান হলেন মো. মোজাম্মেল হক। যিনি গ্রেপ্তার হাজেরা বেগমের স্বামী। তাকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

চক্রে কতজন জড়িত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংখ্যাটি এখনো বের করা সম্ভব হয়নি, তদন্তাধীন। তবে এর সঙ্গে অনেকে জড়িত। কেউ বাজারজাতকরণের কাজে, কেউ কুরিয়ার সার্ভিস বা সশরীরে ভেন্ডারদের নকল স্ট্যাম্প পৌঁছে দিত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই কাজে যাদের অবদান বা সংশ্লিষ্টতা আছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

এমএসি/জেডএস