ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের মতো দেশের প্রতিটি স্টেশনে ট্রেনের জন্য ডিসপ্লে বোর্ড রাখা ও কোচ ইন্ডিকেটর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া যারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন না, তাদের জন্য অন্তত কিছু টিকিট কাউন্টারে রাখার দাবিও এসেছে যাত্রীদের মধ্য থেকে। একইসঙ্গে টিকিট কালোবাজারি আবারও বেড়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

রোববার (২৭ অক্টোবর) কমলাপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসার্স রেস্টহাউজে রেলওয়ের ঢাকা বাণিজ্যিক বিভাগ আয়োজিত অংশীজন সভায় পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজারকে (সিসিএম) সরাসরি এমন অভিযোগ ও দাবির কথা জানান যাত্রীরা।

সিসিএম মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ঢাকাসহ দেশের বড় বড় স্টেশনগুলোতে ট্রেনের শিডিউলের ডিসপ্লে বোর্ড রাখা আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম স্টেশনে এই মুহূর্তে কোচ ইন্ডিকেটর চালু আছে। ঢাকা ও বিমানবন্দর স্টেশনে এটি চালু করা হলেও বেশি সময় কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবারও চেষ্টা করব। একই সঙ্গে আজ থেকে কোচে থাকা আলফাবেটগুলো যেন একদম পরিষ্কার দেখা যায়, সেই বিষয়টিও কার্যকর করব।

কালোবাজারি থেকে যাত্রীদের টিকিট কিনতে নিরুৎসাহিত করে তিনি বলেন, অনেকেই অভিযোগ করেন রিফান্ডের টাকা ফেরত আসে না কেন। মূলত যে নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট ওপেন করা হয়েছে, টাকা রিটার্ন হলে ওই নাম্বারটিতেই টাকা যাবে। ফলে আপনি অন্য কারো কাছ থেকে বা অন্য কারো সাহায্যে টিকিট সংগ্রহ করলেও সেই রিফান্ডের টাকা আপনি ফেরত পাবেন না। যার অ্যাকাউন্ট থেকে টিকিটি কাটা হয়েছে, তার ওখানে যাবে। আমরা রিফান্ডের কোনো টাকা আটকে রাখি না। এছাড়া আপনারা যদি কালো বাজার থেকে টিকিট সংগ্রহ না করেন, তাহলে তারা নিরুৎসাহিত হবে। আপনি টিকিট না পেলে, পরের দিন যান। কিন্তু আপনারা কেউ কালো বাজার থেকে টিকিট কিনবেন না। যেমন বিমানের টিকিট না পেলে আপনার জোর করে বিমানবন্দরে যান না, তেমনি ট্রেনের টিকিট না পেলে আপনারা অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে স্টেশনে আসবেন না। এতে যারা টিকিট পেয়েছেন, তাদের যাত্রা কষ্টদায়ক হয়।

কাউন্টারে টিকিট রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন সব টিকিট অনলাইন ও কাউন্টারে সমানভাবে দেওয়া হয়। আগে ৫০ শতাংশ অনলাইনে, ৫০ শতাংশ কাউন্টারে দেওয়া হতো। আপনারা যদি দাবি করেন, আমরা আবারও সেটি করতে পারব। তবে আপনার আগে ভেবে দেখবেন কোনটা আপনাদের জন্য ভালো হবে।

গত জুন মাসের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সিসিএম বলেন, গত জুন মাসে যদিও ১৮ দিন ট্রেন চলেছে। তারপরেও ওই সময়ের ৭০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে এবং ৩০ শতাংশ টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় টিকিটের সংখ্যা কম, তাই টিকিট নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. মহব্বতজান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অংশীজন সভায় ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খাঁন, পূর্বাঞ্চলের সব রুটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার, স্টেশন মাস্টার, সাধারণ যাত্রী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা সন্দীপ দেবনাথ প্রমুখ।

এমএইচএন/জেডএস