বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানা বাংলাদেশে সরাসরি আঘাত না হানলেও উপকূল অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তবে এর প্রভাবে বঙ্গপোসাগর উত্তাল থাকলেও উপকূলীয় জেলাগুলোতে দানার বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি।

শুক্রবার সকাল থেকে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টি নেই। এ ছাড়া, আবহাওয়াও অনেকটা স্বাভাবিক আছে।

শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে উত্তর ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করেছে।

এটি বর্তমানে উত্তর ওড়িশা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে আগামীকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ওড়িশায় আঘাতের পর ছত্তীসগঢ়-মধ্যপ্রদেশের দিকে এগোচ্ছে ‘দানা’

ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজ্যটির ধামারা ও ভিতরকণিকার মধ্যে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়টি। আর এই দুর্যোগের জেরে পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে ওড়িশায় আঘাতের পর ভারতের অন্য দুই রাজ্য ছত্তীসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশের দিকে এগোচ্ছে ‘দানা’। তবে তার আগে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে শুধুমাত্র সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, রাত সাড়ে এগারোটা থেকে ধামারায় দানার স্থলভাগের আছড়ে পড়া বা ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সময় এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ধামারায় দানার শক্তি বাড়তে থাকে।

শুক্রবার সকালে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ হয়। একশ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় হচ্ছে। সঙ্গে হচ্ছে প্রবল বৃষ্টি।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া চলেছে। আর শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মৌসম ভবন জানিয়েছিল, দানার টেইল বা লেজের অংশ এখন স্থলভাগে প্রবেশ করছে। ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে আরও দুই ঘণ্টা সময় লাগবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাত থেকেই ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে প্রকৃতির তাণ্ডব। তীব্র ঝোড়ো বাতাস, সেই সঙ্গে অবিরাম বৃষ্টি।

এমজে