স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় ছয়টি সেলস সেন্টার খুলেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) নগরের স্টেশন রোড রেয়াজউদ্দিন বাজারের মুখে ভোক্তাদের হাতে সুলভমূল্যে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আলু, ডিম, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে তুলে দিয়ে সেলস সেন্টারের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম।

জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ছাত্র সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে ৩টি এবং টিসিবি ২০টি পয়েন্টে সুলভমূল্যে পণ্য বিক্রি করছে।

জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরের রিয়াজ উদ্দিন বাজার, বক্সিরহাট, পাহাড়তলী কাঁচাবাজার, পতেঙ্গা স্টিলমিল বাজার, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার ও ২নম্বর গেট কর্ণফুলী কাঁচাবাজারে সেলস সেন্টার খোলা হয়।

সেলস সেন্টার উদ্বোধন শেষে ফরিদা খানম বলেন, চট্টগ্রাম শহরে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পয়েন্টে সুলভমূল্যের দোকান দিয়েছি। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমিয়ে আনতে জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলার প্রত্যেক উপজেলায়ও সুলভমূল্যের বাজার খোলা হয়েছে। দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে গত ১০ অক্টোবর তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। এরপর থেকে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমরা পুরোদমে বাজার মনিটরিংয়ের কাজ শুরু করেছি। 

তিনি বলেন, ১০ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা ৮৯টি অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে ৩৫০ জনকে ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছি। দ্রব্যের মূল্য বাড়ায় সুবিধাবঞ্চিত ও খেটে খাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমিয়ে আনা আমাদের মূল উদ্দেশ্য। এ জন্য সৎ ব্যবসায়ীরাসহ সবাই আমাদের পাশে আছে। আমাদের ধারাবাহিক বাজার মনিটরিং ও অভিযানের কারণে নিত্যপণ্যের মূল্য কিছুটা হলেও কমে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বিভিন্নস্থানে ফসলের ফলন কিছুটা কম ছিল। প্রতিবছর এ সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। 

তিনি আরও বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরাও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বুদ্ধি করে রাখে। সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে আমরা সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পারলে শিগগিরই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের ভেতর থাকবে। যতদিন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না আসবে ততদিন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা ও ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ভোক্তাদের জন্য আরও বিভিন্ন ধরনের সবজি ও নিত্যপণ্য নিয়ে নিয়ে জেলা প্রশাসন সেলস সেন্টারের পরিধি বাড়ানো হবে।

এ সময় জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজীব হোসেন, মো. আলাউদ্দিন শাকিব শাহরিয়ার, রিয়াজউদ্দিন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা, ছাত্র সমন্বয়করা এবং ক্যাবের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেলস সেন্টারগুলো খোলা থাকবে বলে জানা গেছে।

এমআর/এমএ