নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় অভিযান চালিয়ে ৫০০ পিস অবৈধ বেহুন্দি জাল, ৩ লাখ মিটার অবৈধ চরঘেরা জাল, ৫ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২৫০ টির বেশি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জব্দ করা জালের আনুমানিক মূল্য দেড় কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতভর অভিযান পরিচালনা করে জাহাজমারা ইউনিয়নের জাহাজমারা বাজারে অভিযান পরিচালনা করে এসব জাল জব্দ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন হাতিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) মিল্টন চাকমা। এ সময় ৪টি দোকান মালিককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং অভিযানে জব্দ জালসমূহ জনসম্মুখে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়,  উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য দপ্তর, কোস্টগার্ড এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে হাতিয়ার জাহাজমারা বাজারের ৪টি বড় দোকান ও দোকান সংলগ্ন গুদামে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অন্তত ৫০০টি অবৈধ বেহুন্দি জাল, ৩ লাখ মিটার অবৈধ চরঘেরা জাল, ৫ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল, ২৫০টির বেশি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করা হয়। পরে হাতিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মিল্টন চাকমা ৪ টি দোকান মালিককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং জব্দকৃত জাল সমূহ জনসম্মুখে পুড়িয়ে বিনষ্ট করেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী সরকার ২০১৩ সালে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড়/জগৎবেড় জাল, কারেন্ট জাল প্রভৃতি ক্ষতিকারক জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং ইলিশ আহরণের জালের ফাঁস ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণ করেছে।

হাতিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) মিল্টন চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই দোকানগুলোকে হাতিয়ায় সবচেয়ে বড় অবৈধ জালের দোকান হিসেবে ধারণা করা হতো। আশা করা যায় এই অভিযানের পরে জাহাজমারা, নিঝুম দ্বীপ, বুড়িরচর ইউনিয়ন ইউনিয়ন সংলগ্ন নদীতে তথা সমগ্র হাতিয়ায় অবৈধ জালের ব্যবহার কমে আসবে। উক্ত অবৈধ জাল পরে জনসম্মুখে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়। মাছ ধ্বংসকারী জাল প্রতিরোধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৯৭১ সালের পরে এত বড় অভিযান হয়েছে কি না আমাদের জানা নাই। বর্তমান সরকারের সময়ে এমন অভিযান আমাদের জন্য বিশাল কিছু।

আসলে মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর এসব জালের ব্যবহার বাড়লে জাটকাসহ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম, রেণু ও পোনা নষ্ট হয় এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি জলজ জীব বৈচিত্র্য নষ্ট হয়।

হাসিব আল আমিন/এমএ